শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
No menu items!
বাড়িজাতীয়আজ ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস

আজ ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস

মোঃ রেমন ইবনে ইসলাম

১৯৮৭ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘গ্রো ফুড, নট টোব্যাকো’ বাংলায়-‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’। তামাক উৎপাদনে কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করাও এবারের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে দিবসটি উদযাপিত হবে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতাধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) প্রতিবছরের মত এবারও যথাযথ গুরুত্বের সাথে দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, ইলিশ মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম এবং কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়। ধান, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয়। এছাড়া চা এবং ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ চতুর্থ। আম উৎপাদনে সপ্তম এবং মোট ফল উৎপাদনে ২৮তম দেশ বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের মাটি, সোনার চেয়েও খাঁটি। এদেশের আবহাওয়া এবং উর্বর মাটিতে কৃষক সোনা ফলায়।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি ও ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ২০১৮ সালে এক জরিপ চালায়। জরিপে ২০০৪ সালের তথ্যের তুলনা করা হয়। এতে দেখা যায়, ১৫ বছরে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে মৃত্যুর হার দ্বিগুণ হয়েছে। তামাক ব্যবহারজনিত নানা অসুখে প্রতি বছর এক লাখ ২৫ হাজারের মতো মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। তাই এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উপরোক্ত প্রতিপাদ্য বিষয় এর উপর জোড়া দিয়ে বিভিন্ন সচেতনতা মূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৯৯ হাজার ৬০০.২৪ একর কৃষি জমিতে তামাক চাষ করা হচ্ছে। যা বর্তমানে দেশের খাদ্য উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে মারাত্মক ভাবে যা এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে দেশের মধ্যে খাদ্য সংকট তৈরি করতে পারে বলে বিশষজ্ঞরা মনে করেন। তামাক চাষ মাটির উর্ব্বরতা শক্তি হ্রাস করে যেটা সর্বজন স্বীকৃত, যা কৃষকরাও অবগত আছেন। তামাক চাষের কারণে খাদ্যশস্য চাষের জমি কমে যাচ্ছে দিন দিন। দেশের যেসব জেলায় তামাক চাষ হয় সেখানে পুষ্টিকর খাদ্য সংকট রয়েছে মনে প্রতিয়মান হয়। পরিবেশ, প্রাণিকুলেও তামাক চাষের বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে।

টোব্যাকো অ্যাটলাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৩১ শতাংশ বন নিধনের পেছনে তামাক চাষ দায়ী। গবেষণায় দেখা গেছে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার তিনটি উপজেলায় তামাকপাতা শুকানোর (কিউরিং) কাজে এক বছরেই প্রায় ৮৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি কাঠ ব্যবহৃত হয়েছে। স্থানীয় বন থেকে এইসব কাঠ সংগ্রহ করায় পাহাড়গুলো বৃক্ষহীন হয়ে পড়ছে এবং সেখানকার অধিবাসীরা আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধ্বসের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া তামাক চাষে ব্যবহৃত অতিরিক্ত কীটনাশক ও সার বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে নিকটস্থ জলাশয়ে মিশে মৎস্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সর্বশেষ কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ- ২০২১ অনুযায়ী, বাংলাদেশে তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণ ৯৯ হাজার ৬০০.২৪ একর। তামাকের পরিবর্তে এই পরিমাণ জমিতে বোরো ধান আবাদ করলে এক লাখ ৬৭ হাজার ৪২৮ মেট্রিক টন ধান এবং এক লাখ ৩২ হাজার ৯৬৬ মেট্রিক টন গম বা ৮ লাখ ৫০ হাজার ৩৮৭ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন করা সম্ভব হতো। উল্লেখ্য, ২০২১ রবি মৌসুমে বোরো, গম এবং আলুর একর প্রতি গড় উৎপাদন ছিল যথাক্রমে এক হাজার ৬৮১ কেজি, এক হাজার ৩৩৫ কেজি এবং আট হাজার ৫৩৮ কেজি।

তাই এখনি আমাদের সচেতন হতে হবে, দেশ ও দেশের পরিবেশ সুরক্ষায় জনগন, সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যথার্ত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

 স্বদেশ সমাচার/এসএ/আরআইএস

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মানবতার সেবায় কালিয়াকৈর গ্রুপ

টিভিতে আজকের খেলা