সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
No menu items!
বাড়িজাতীয়পানি কমলেও কমেনি দুর্ভোগ

পানি কমলেও কমেনি দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে দ্বিতীয় ধাপের বন্যায় সবগুলো নদ-নদীর পানি কমলেও কমেনি বানভাসীদের দুর্ভোগ। ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও চরের নিচু এলাকাগুলো থেকে নামেনি পানি। এর ফলে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা ছিল খুবই অপ্রতুল। রান্না করা খাবারের সংকট রয়েছে ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার অববাহিকার চরগুলোতে।

বুধবার (১৯ জুলাই) সকালে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চর খেয়ার আলগা, মশালের চর, পোড়ার চর, চর রসুলপুর, দুধকুমার অববাহিকার কুটির চর, ফান্দের চরগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, এখানকার বাসিন্দারা যারা উঁচু জায়গায় যেতে পারেননি। তারা ঘরের বিছানার ওপর ও নৌকায় পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে পাশের একটু উঁচু জায়গায় কোনোমতে বসে আছেন। কেউ কেউ নিজের বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

সরকারিভাবে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হলেও রান্না করার জন্য নেই পর্যাপ্ত জ্বালানি। ভাতের সঙ্গে খাওয়ার মতো সবজি বা ডালও নেই। টিউবওয়েলগুলো এখনো পানির নিচে থাকার কারণে খাবার পানির সংকট রয়েছে। এ ছাড়া নারীদের পয়ঃনিস্কাশনের ব্যাপক সমস্যা দেখা গেছে।

জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, বন্যা পরিস্থিতিতে কুড়িগ্রামে ৭২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৬১ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি উঠায় জেলার ৬৬টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ৬৫০টি পুকুরের ১৩০ মেট্রিক টন পোনা মাছের।

ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার পোড়ার চরের বাসিন্দা নাদু শেখ বলেন, “পাঁচ-ছয় দিন থাকি নৌকাত আছি। খাওয়া-দাওয়া চলাফেরার খুব কষ্ট হইছে। ছোট ছোট বাচ্চা নিয়া খুব কষ্ট হচ্ছে।”

রসুলপুর চরের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, “খাওয়ার পানির খুব কষ্ট হইছে। নদীর পানি ফোটে খাওয়া নাগে। রান্না করার খড়ি নাই। ভাত খামো ক্যামনে। বাথরুম করারও খুব অসুবিধা হইছে।”

দুধকুমার পাড়ের ফান্দের চরের বাসিন্দা জলিল মিয়া বলেন, “সরকার থাকি ১০ কেজি করি চাউল পাইছি। চাউল দিয়া কী করমো, রান্নাবাড়া করা যাবাইছে না। শুকনা চিড়া-মুড়ি খায়্যা আছি।”

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানান, বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার, চিলমারী বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার, তিস্তা কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার, ধরলা সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমাদের বন্যা পূর্বাভাস অনুযায়ী কুড়িগ্রামে আগামী এক সপ্তাহে পুনরায় পানি বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি কমে দুই-তিন দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।”

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ বলেন, “এখন পর্যন্ত জেলার ৯ উপজেলায় বন্যাকবলিত ২২ হাজার মানুষকে সরকারি খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাহিদানুযায়ী পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও সবজি বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মানবতার সেবায় কালিয়াকৈর গ্রুপ

টিভিতে আজকের খেলা