১৫ নম্বরে থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ২০২৪-২৫ মৌসুম শেষ করেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। মাঝপথে এরিক টেন হাগকে সরিয়ে কোচের দায়িত্বে রুবেন অ্যামোরিমকে বসানো হলেও, রেড ডেভিলদের সেই দশা কাটেনি। চলতি মৌসুমেও একই পরিণতি ইউনাইটেডের। এখন পর্যন্ত ২০২৫-২৬ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে ৬ ম্যাচ খেলে কেবল দুটিতে জিতেছে। ১ ড্র ও ৩ হার নিয়ে টেবিলে তাদের অবস্থান ১৪তম।
এই অবস্থা চলতে থাকলে খুব বেশিদিন আর ম্যানচেস্টারের ক্লাবটির ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকতে পারবেন না অ্যামোরিম। তিনি নিজেও সেটি স্বীকার করেছেন। আজ (শনিবার) রাতে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে সান্ডারল্যান্ডের এফসি’র বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগে খেলতে নামছে ইউনাইটেড। সান্ডারল্যান্ড বর্তমানে ৬ ম্যাচে ৩ জয় ও ২ ড্র নিয়ে টেবিলের ছয়ে রয়েছে। অর্থাৎ, তাদের বিপক্ষেও যে ইউনাইটেডের লড়াইটা সহজ হচ্ছে না তা অনুমেয়।
মাঠে নামার আগে নিজের কোচিংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগেভাগেই স্বীকারোক্তি দিয়ে রাখলেন অ্যামোরিম, ‘এখানে কেউ নির্বোধ নয়। সবাই বুঝতে পারছি আমাদের প্রজেক্ট চালিয়ে নিতে ফলাফল (পক্ষে) থাকতে হবে। এটি অনেক বড় ক্লাব, যেখানে অনেক স্পন্সর ও দুজন মালিক। সবাই একটি বিন্দুতে এসে মিলিত হয়েছে, জয় না পেলে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব।’
পর্তুগিজ ক্লাবকে কোচিং করিয়ে নজর কেড়েছিলেন রুবেন অ্যামোরিম। তার হাত ধরেই সেসব ক্লাব সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত ১০ মাসে প্রিমিয়ার লিগের ৩৩ ম্যাচে কেবল ৯টি জয় এসেছে। এমন দুর্দশা চললে যে সহ-মালিক স্যার জিম র্যাটক্লিফের আস্থাভাজনের তালিকায় থাকা কঠিন তা–ও মেনে নিচ্ছেন অ্যামোরিম। এখন পর্যন্ত তার অধীনে প্রিমিয়ার লিগের চার ম্যাচে ইউনাইটেড জয় পেয়েছে নিচের সারিতে থাকা সাউদাম্পটন, লেস্টার সিটি, ইপসউইচ ও বার্নলির মতো ক্লাবের সঙ্গে।
খেলার ধরনের কারণেই দল জিততে পারছে না বলে মনে করেন ইউনাইটেড কোচ অ্যামোরিম, ‘আমি বড় এই ক্লাবের ম্যানেজার এবং আমার কী করা উচিত তা আপনারাই (মিডিয়া) বলে দিচ্ছে। এটি হতে পারে না। এভাবে টিকে থাকা যায় না। আপনারা যখন বলেছেন এখানে সিস্টেমে সমস্যা, তা শুনে আমি মরিয়া হয়ে পড়েছিলাম। কারণ দলটাকে আমি সামনে থেকে দেখছি। এই সিস্টেমেই লম্বা সময় ধরে তারা খেলে আসছে। তবে সিস্টেমে সমস্যা নয়, কিছু ছোটখাটো বিষয় এবং তাদের খেলার ধরন (প্রভাব ফেলছে)।
ইউনাইটেডের এই বিপর্যস্ত অবস্থার কারণে ৪০ বছর বয়সী এই কোচ চাকরি হারাতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তিনি অবশ্য এই সিদ্ধান্তের ভার ক্লাবের হাতেই ছেড়েছেন, ‘এটি বোর্ডের সিদ্ধান্ত। মাঝেমধ্যে আমারও (বরখাস্তের শঙ্কা) সেটা অনুভব হয় এবং হার মেনে নেওয়া কঠিন। যখনই আপনি মোমেন্টাম তৈরি করার পর ম্যাচের আগে কিছু ঘটে যায়, তা হতাশার। এসব আমাদের অনেক আঘাত করে, সবাই হতাশ হয়। কিন্তু সব তো আমাদের হাতে নেই। আমি সবকিছু ঠিকঠাক অনুসরণ করে এখানে ক্যারিয়ার গড়তে আসার পর এসব দেখা ও মানা সহজ নয়।’