সোমবার, অক্টোবর ১৩, ২০২৫
No menu items!
বাড়িখেলাধুলারশিদ খান নাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা—কিসে সিরিজ হারল বাংলাদেশ

রশিদ খান নাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা—কিসে সিরিজ হারল বাংলাদেশ

আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে এলবিডব্লু মেহেদী হাসান মিরাজ। টিভি পর্দায় ভেসে উঠল বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের মুখ। চেহারায় হতাশা নিয়ে অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে মাথা নাড়ছিলেন তিনি।

তবে আজমতউল্লাহর গতির কাছে নয়, বাংলাদেশ গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে হেরেছে মূলত রশিদ খানের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে। তিন ম্যাচ সিরিজের এক ম্যাচ বাকি থাকতে বাংলাদেশকে সিরিজ হারিয়েছেন রশিদ খানই। প্রথম ম্যাচের তিন উইকেটের পর দ্বিতীয় ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন আফগান লেগ স্পিনার।

আফগানিস্তানের সিরিজ জয়ে রশিদ খানের কৃতিত্ব আছে ঠিক, কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দায়ও কম নেই। গতকালের ম্যাচেও বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করে আফগানিস্তানকে ১৯০ রানে থামিয়েছেন। আফগানিস্তানের ইনিংস শেষে অনেকেই হয়তো মনে করেছিলেন, এ ম্যাচ সহজে জিতে সিরিজ বাঁচিয়ে রাখবে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সেটা আর হলো কই!

জয়ের জন্য ১৯১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ওভারে শূন্য রানে তানজিদ হাসানকে হারায় বাংলাদেশ। সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেনের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল ধাক্কাটা সামলে নিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু ২৫ রানের জুটি গড়ে নাজমুল আউট হওয়ার পর শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল। সেই মিছিলের বেগ বাড়ে শেষের দিকে। ৫ উইকেটে ৯৯ রান থেকে ১০৯ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবচেয়ে কম রানের ইনিংস ‘উপহার’ দিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ৮১ রানে।

ব্যাখ্যাহীন ব্যাটিংয়ে নিশ্চিত হয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের টানা চতুর্থ সিরিজ হারও, আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা তৃতীয়। মিরাজের আউট আর সিমন্সের হতাশা নিয়ে লেখার শুরুটা কেন, তা একটু ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন। আজমতউল্লাহর যে বলটিতে মিরাজ এলবিডব্লু হয়েছেন, সেটি নিরীহদর্শন একটি বলই ছিল। কিন্তু মিরাজের ব্যাট আর প্যাডের মধ্যে থাকা বিশাল ফাঁকই সমস্যা তৈরি করে। সিমন্সের অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে দুটি আউট দেখে। রশিদের বলে সেই আউট দুটি হয়েছেন তাওহিদ হৃদয় ও নুরুল হাসান।

এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা লেগ স্পিনার রশিদ। তাঁকে সামলে না খেলে দলের সমস্যার সময় কেন পাল্টা আক্রমণ করতে হবে! তা-ও আবার লক্ষ্য খুব বড় না হওয়ার পরও। রশিদের দুটি ডেলিভারিই ছিল সোজা, সেই সোজা বলে অসময়ে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন হৃদয় ও নুরুল। এর আগে সাইফের সঙ্গে ২৪ বলে ২৪ রানের জুটি গড়ে অহেতুক দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে ফিরেছেন নাজমুল। সাইফের বিপক্ষে থার্ডম্যানে ফিল্ডার রেখে অফ সাইডে বাউন্সার দিয়েছিলেন আজমতউল্লাহ। ফাঁদে পা দিয়ে সেই বলটি থার্ডম্যান দিয়ে সীমানা পার করতে গিয়ে আউট সাইফ।

এর আগে আফগানিস্তানকে দুই শর কাছাকাছি রান এনে দেন ইব্রাহিম জাদরান। এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলা ইব্রাহিম অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দুরে থাকতে। ১৪০ বলে ৯৫ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। আফগানিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ বলে ২২ রানের ইনিংসটি মোহাম্মদ গজনফরের। মোহাম্মদ নবীও ২২ রান করেছেন, খেলেছেন ৩০ বল। আফগানিস্তানকে অল্প রানে আটকে রাখতে ৪২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। দুটি করে উইকেট তানজিম হাসান ও রিশাদ হোসেনের।

এ নিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের সর্বশেষ ১১ ওয়ানডের ১০টিতেই হারল। ওয়ানডের ধারাবাহিক এই ব্যর্থতা আগামী বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার পথেও বাধা হতে পারে। ২০২৭ সালের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে বাংলাদেশের সামনে র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা ৯ নম্বরে থাকার বিকল্প নেই। বাংলাদেশ এখন আছে ১০ নম্বরে।

Notify of
guest
0 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ