৫ আগস্ট আমার কোনো পূর্বনির্ধারিত রাষ্ট্রীয় বা সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল না বলে শোকজের জবাবে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) তিনি তার ফেসবুক পেজে ওই শোকজের জবাব প্রকাশ করেছেন।
জবাবে নাসীরুদ্দীন জানান, ৫ আগস্ট তার কোনো পূর্বনির্ধারিত রাষ্ট্রীয় বা সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল না। দল থেকেও তাকে কোনো দায়িত্ব জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘৪ আগস্ট রাতে দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ তার কোচিং অফিসের সহকর্মীর ফোন ব্যবহার করে আমাকে জানায় যে, সে তার স্কুল বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাবে। আমি তাকে আহ্বায়ক মহোদয়কে অবহিত করতে বলি। সে জানায়, বিষয়টি জানাবে এবং আমাকেও জানাতে বলে-কারণ তার নিজস্ব ফোন পদযাত্রায় চুরি হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি একই রাতে আহ্বায়ক মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানাই এবং সদস্য সচিবের সঙ্গেও ফোনে কথা বলি। তিনি জানান, রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে দল থেকে তিনজন প্রতিনিধি যাচ্ছেন এবং সেখানে আমার কোনো দায়িত্ব নেই।’
নাসীরুদ্দীন জানান, কোনো দায়িত্বে না থাকায় এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজন ও মানসিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিনি ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সফরসঙ্গী হিসেবে সস্ত্রীক সারজিস আলম এবং তাসনিম জারা-খালেদ সাইফুল্লাহ দম্পতি ছিলেন।
তিনি দাবি করেন, এই ভ্রমণ শুধুই ঘোরাঘুরি ছিল না। বরং রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে চিন্তা করার একটি সুযোগ হিসেবেও তিনি এ সফরকে দেখেছেন। ‘সাগরের পাড়ে বসে আমি গভীরভাবে ভাবতে চেয়েছি গণঅভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি, নাগরিক পার্টির কাঠামো, ভবিষ্যৎ গণপরিষদ এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধানের রূপরেখা নিয়ে,’ বলেন তিনি।
ভ্রমণকালে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে- তারা নাকি সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমকে জানাই যে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, পিটার হাস নামে কেউ সেখানে ছিলেন না। পরবর্তীতে বিভিন্ন সূত্র থেকেও জানা যায়, তিনি তখন ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন।’
শোকজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতির আলোকে, আমি মনে করি শোকজ নোটিশটি বাস্তবভিত্তিক নয়। আমার সফর ছিল স্বচ্ছ, সাংগঠনিক নীতিমালাবিরোধী নয় এবং একান্ত ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনার সুযোগ মাত্র।’
শেষে তিনি লিখেছেন, ‘তবু দলীয় শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে আমি এই লিখিত জবাব প্রদান করছি। আমার বক্তব্য স্পষ্ট: ‘‘ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়।’’ কারণ ইতিহাস কেবল মিটিংয়ে নয়, অনেক সময় নির্জন চিন্তার ঘরে বা সাগরের পাড়েও জন্ম নেয়।