মঙ্গলবার, অক্টোবর ২১, ২০২৫
No menu items!
বাড়িরাজনীতিরাজশাহীর ৬ আসন বিএনপির বিভাজনের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় জামায়াত

রাজশাহীর ৬ আসন বিএনপির বিভাজনের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় জামায়াত

রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনে জয় নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। এসব আসনে কয়েক মাস আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে দলটি। ভোটকেন্দ্রিক বিভিন্ন কমিটি গঠনের কাজও শেষ হয়েছে। এখন ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন ও কেন্দ্র পরিচালনার কলাকৌশল নিয়ে তাদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন উপায়ে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে

এদিকে আগামী নির্বাচনে বিএনপির দুর্গ বলে খ্যাত রাজশাহীতে এমন অবিশ্বাস্য ফলাফল প্রত্যাশার বিষয়ে জামায়াত নেতারা বলছেন, ৫ বছরের বেশি রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির নিয়মিত কোনো কমিটি নেই। দীর্ঘদিন ধরে এখানে বিএনপির সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা প্রকট। নেতাকর্মীরা বহু দল-উপদলে বিভক্ত। সরকার পতনের পর থেকে বিএনপির নামে জেলাজুড়ে দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজি ও অরাজকতা করেছে একশ্রেণির নেতাকর্মী। সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে এসব ঠেকাতে পারেনি বিএনপির স্থানীয় নেতৃত্ব। বিপরীতে জামায়াতের নেতাকর্মীরা এসব অপকর্মের ধারে-কাছে যায়নি। এসবই জামায়াতের নেতাকর্মীদের জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।

জেলা জামায়াতের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, স্বাধীনতার পর স্বতন্ত্রভাবে প্রথমবার অংশগ্রহণ করে ১৯৮৬ সালে সারা দেশে জামায়াত যে ১০টি আসন পেয়েছিল তার অন্যতম ছিল রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর)। দলীয় প্রতীকে এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনেও দল তাকেই প্রার্থী করেছেন।

নেতাকর্মীদের আরও দাবি, জেলার ছয়টি আসনেই জয় পেতে তারা আশাবাদী। এরমধ্যে দুটিতে জয় প্রায় নিশ্চিত। কারণ এ দুটি আসনে তাদের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিতে সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা বেশি। আসন দুটি হলো-রাজশাহী-১ ও রাজশাহী-৪ (বাগমারা)।

দলের নেতাকর্মীরা জানান, অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের পৈতৃক বাড়ি গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মহিষালবাড়ির সাগরপাড়ায়। এলাকায় তিনি সজ্জন ও সৎ ব্যক্তি হিসাবে সর্বমহলে সমাদৃত। নির্বাচনি এলাকার মানুষের সঙ্গে তার যোগাযোগ নিবিড়। এছাড়া গোদাগাড়ী ও তানোরে জামায়াতের সাংগঠনিক ভিত্তিও মজবুত। ১০ ফেব্রুয়ারি প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীরা মুজিবুর রহমানের পক্ষে বিরতিবিহীনভাবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া এই আসনে জামায়াতের সংরক্ষিত ভোট রয়েছে, যা তার জয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।

অন্যদিকে বাগমারা আসনে জামায়াতের প্রার্থী স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় চিকিৎসক ডা. আব্দুল বারী। যার একটি হাসপাতাল আছে। দীর্ঘ বছর ধরে এই হাসপাতালকেন্দ্রিক সেবা দিয়ে আসছেন তিনি। বাগমারা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রার্থী ডা. আব্দুল বারী শহরে গিয়ে ভালো আয় করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে গত ৩০ বছর ধরে নিজ এলাকার মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন। দলমত নির্বিশেষে সবার সঙ্গেই তার নিবিড় সম্পর্ক এলাকায় তাকে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি বর্তমানে বাগমারা উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। আশা করি তিনি এ আসনে বিপুল ভোটে জয় পাবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক যুগান্তরকে বলেন, আমরা রাজশাহীর ছয়টি আসনেই জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াতের রাজনীতির মাঝেই মানুষ ন্যায়বিচার, উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও জাতি হিসাবে আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখার প্রতিফলন দেখছেন।

জামায়াত নেতাদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, কোনো দল এমন আশা করতেই পারে। সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু রাজশাহীর রাজনৈতিক বাস্তবতাও তাদের বুঝতে হবে। রাজশাহী বিএনপির দুর্গ। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি আসনের মধ্যে ৩৮টিতে জয়ী হয়েছিল। এবারও বিএনপি রাজশাহীর ছয়টিসহ বিভাগের সব আসনেই বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে।

 

Notify of
guest
0 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ