রবিবার, নভেম্বর ২, ২০২৫
No menu items!
বাড়িরাজনীতিগুলশানে বিএনপির সভায় ডাক না পেয়ে হতাশ অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী

গুলশানে বিএনপির সভায় ডাক না পেয়ে হতাশ অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী

• ১৭ বছরের ত্যাগের তথ্য তারেক রহমানকে দেওয়া হয়নি
• অভিযোগের তীর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দিকে
• দমন-নিপীড়নের শিকার নেতারাও ডাক পাননি সভায়
• একক প্রার্থী নির্ধারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিএনপিকে
• দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান
• ত্যাগীদের বাদ দিয়ে টাকাওয়ালাদের মূল্যায়নের অভিযোগ

আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচনে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নিজেদের আসনভিত্তিক দলীয় প্রার্থী বাছাই করছে রাজনৈতিক দলগুলো। এরমধ্যে প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিতে। এরমধ্যে বিগত ১৭ বছরে রাজনৈতিক দমন-পীড়নের শিকার নেতারাও রয়েছেন। যে কারণে একক প্রার্থী নির্ধারণ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দলটিকে।

এরই মধ্যে গত ২৬ অক্টোবর (রোববার) চট্টগ্রাম বিভাগের আসনগুলোতে দলীয় একক প্রার্থী নির্ধারণের বিষয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে ঢাকার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সভা করেছে বিএনপি। এতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। তবে ওই সভায় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেকেই ডাক পাননি। এতে গুলশানে ডাক না পাওয়া নিয়ে কোন্দল দানা বাঁধছে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে। বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগের তথ্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন ওই সভায় ডাক না পাওয়া অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী। অনেকের অভিযোগ, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে ত্যাগী নেতাদের গুলশানের সভায় ডাকেননি।

‘আমার বিরুদ্ধে বর্তমানে ২৮৪টি মামলা। সবগুলোই রাজনৈতিক। গত ১৭ বছরে রাজপথের আন্দোলনে থাকার কারণে ৩২ বার গ্রেফতার হয়েছিলাম। বিভিন্ন মেয়াদে ১২৪ দিন রিমান্ডে ছিলাম। বিগত জুলাই আন্দোলনেও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সক্রিয় অংশ নিয়েছি। আমাদের এ ত্যাগের কথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে পৌঁছানো হয়নি। এজন্য দায়ী বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম।’ —গাজী সিরাজ উল্লাহ, চট্টগ্রাম-১২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৬ অক্টোবরের ওই সভায় চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর-খুলশী) ও চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর, পতেঙ্গা, ডবলমুরিং, ইপিজেড ও সদরঘাট) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী কাউকে ডাকা হয়নি। মূলত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম-১০ ও চট্টগ্রাম-১১ এই দুই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী হওয়ায় অন্য কাউকে ডাকা হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে। তবে এর মধ্যে চট্টগ্রাম-১১ আসনে বিএনপির প্রয়াত সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাঈদ আল নোমানও মনোনয়নপ্রত্যাশী।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ৫৭ জনকে ডাকা হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী বিদেশে অবস্থান করায় ওই সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। সভায় ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে মনোনয়নপ্রত্যাশী সবাইকে দলের নির্ধারিত প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান।

গুলশানের সভায় অংশ নেন যারা

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই): চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি): বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ ফয়জী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মো. আজিম উল্লাহ বাহার, ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছালাউদ্দিন এবং উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার আলমগীর।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ): সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোস্তফা কামাল পাশা, উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুল রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু তাহের, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তরিকুল আলম তেনজিন এবং ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক রফি উদ্দিন ফয়সাল।

 

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড): চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সালাউদ্দিন। তবে ডাক পেয়েও বিদেশে থাকায় অংশ নিতে পারেননি আসলাম চৌধুরী।

‘আমাদের গুলশান কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে সত্য। কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কারও সঙ্গে কথা বলেননি এবং কারও বিষয়ে জানতেও চাননি। সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সবাইকে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।’ —সভায় ডাক পাওয়া চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও বায়েজিদ): বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এসএম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান): বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার এবং উত্তর জেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন সিকদার।

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া): বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউনুছ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবু আহমেদ হাসনাত।

চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও, বোয়ালখালী ও পাঁচলাইশ-আংশিক): মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মোস্তাক আহমেদ খান।

‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। যাদের নাম ঘোষণা হবে, তাদের পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। কারণ বিএনপি একটি সুসংগঠিত দল। এখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত দেবেন, দলের প্রত্যেক স্তরের নেতাকর্মী একবাক্যে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন। এতে অনৈক্যের সুযোগ নেই।’ —মাহবুবের রহমান শামীম, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া): চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম সাইফুল আলম এবং নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া): বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি গাজী মো. শাহজাহান জুয়েল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য সৈয়দ সাদাত আহমেদ।

 

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী): সাবেক এমপি সরওয়ার জামাল নিজাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম মামুন মিয়া, সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের পিএস আমিনুল হক।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার আংশিক): বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মহসিন জিল্লুর করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আনোয়ার চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এবং বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম রাহী।

চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার আংশিক): দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক জামাল হোসেন, লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী): সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর দুই ছেলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা ও তার বড় ভাই দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা ও গণ্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনী এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিক।

ওই দিনের সভায় ডাক পেয়েছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের গুলশান কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে সত্য। কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কারও সঙ্গে কথা বলেননি এবং কারও বিষয়ে জানতেও চাননি। সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সবাইকে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।’

ইদ্রিস মিয়া আরও বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ আমলে উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলাম। বিশেষ করে আমার এলাকার সংখ্যালঘু ভোটাররা আমাকে ভালোবাসে। তাছাড়া বিগত সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলাম। এখন যেহেতু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকছে না, আমি মনোনয়ন পেলে সংখ্যালঘু ভোটারসহ বেশিরভাগ ভোট আমার বাক্সে পড়বে। তাছাড়া দল আমাকে মনোনয়ন না দিলেও, যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে জয়ী করে আনতে আমি ভূমিকা রাখবো।’

 

অন্যদিকে চট্টগ্রাম-১২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ। তবে ২৬ অক্টোবর গুলশানের সভায় তিনি ডাক পাননি। এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বর্তমানে ২৮৪টি মামলা। সবগুলোই রাজনৈতিক। গত ১৭ বছরে রাজপথের আন্দোলনে থাকার কারণে ৩২ বার গ্রেফতার হয়েছিলাম। বিভিন্ন মেয়াদে ১২৪ দিন রিমান্ডে ছিলাম। বিগত জুলাই আন্দোলনেও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সক্রিয় অংশ নিয়েছি। আমাদের এ ত্যাগের কথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে পৌঁছানো হয়নি। এজন্য দায়ী বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি পটিয়ায়। আমি ওই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিগত সময়ে অনেক সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজেও জড়িত ছিলাম। মনোনয়ন কাকে দেবেন, কিংবা না দেবেন, সেটি নির্ধারণ করবেন আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কিন্তু আমিসহ রাজপথের অনেক ত্যাগী কর্মীদের ওই সভায় ডাকা হয়নি। এতে চরম অপমানবোধ কাজ করছে। এটা আমাদের মতো রাজপথের কর্মীদের জন্য সুইসাইডাল।’

গাজী সিরাজ উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম বায়াসড (পক্ষপাতদুষ্ট) হয়ে আমাদের গুলশানের সভায় ডাকেননি। অথচ বিগত সময়ে যারা রাজপথে ছিল না, যাদের নামে একটি মামলাও নেই, তাদের ডাকা হয়েছে অনেক আসনে। বাঁশখালীতে সাতজনকে ডাকা হয়েছে। অথচ পটিয়া থেকে ডাকা হয়েছে চারজনকে। মনোনয়ন চাননি এমন নেতাদেরও ডাকা হয়েছে। বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম মূলত রাজপথের ত্যাগীদের বাদ দিয়ে টাকাওয়ালাদের মূল্যায়ন করেছেন।’

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা ও মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সম্পাদক খোরশেদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গুলশান কার্যালয়ের সভার ক্ষেত্রে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা ছিল মাঠপর্যায়ে যারা মনোনয়নপ্রত্যাশী তাদের ডেকে নেওয়া। আমি দীর্ঘদিন ধরে গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া, এলাকায় ব্যানার-পোস্টার সাঁটানোর কাজ করেছি। অথচ আমি এবং আমার মতো অনেককে ডাকা হয়নি।’

খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত থাকায় আমার বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা রয়েছে। কিন্তু গুলশান কার্যালয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সভায় আমাকে ডাকা হয়নি। যারা এ সভার দায়িত্বে ছিল, এটি তাদের দায়। এখানে দলের দুঃসময়ের ত্যাগী অনেক নেতাকে মূল্যায়ন করা হয়নি, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত।’

এ বিষয়ে কথা হলে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গুলশান কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ওই সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের আট জেলার ৩১ আসনের ১১৮ মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ডাকা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৫৬ জন উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় দলের প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্দেশনা দিয়েছেন।’

একক প্রার্থী নিয়ে দলীয় কোন্দলের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। যাদের নাম ঘোষণা হবে, তাদের পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। কারণ বিএনপি একটি সুসংগঠিত দল। এখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত দেবেন, দলের প্রত্যেক স্তরের নেতাকর্মী একবাক্যে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন। এতে অনৈক্যের সুযোগ নেই।’

চট্টগ্রাম-১০ এবং ১১ আসনে কাউকে না ডাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত। উনিই বিষয়টি বলতে পারবেন।’

Notify of
guest
0 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ