ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) রেকর্ড করা ভাষণ প্রচারের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। প্রয়োজন হলে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঘোষণা হতে পারে বলেও জানিয়েছে ইসি।
এর আগে, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাসউদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “বিটিভি ও বেতারে সিইসির ভাষণ প্রচারের জন্য ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছে ইসি সচিবালয়। ভাষণের মাধ্যমেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যেই হওয়ার কথা—সময় খুব কম। ১১ ডিসেম্বরের মধ্যেই তফসিল দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যায় অথবা ১১ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন।
এদিকে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সিইসি সাংবাদিকদের জানান, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।
ইসির দায়িত্বশীল সূত্রমতে, সিইসির ভাষণে দেশের ইতিহাস, ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার গুরুত্ব, পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আহবানসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসতে পারে।
ভাষণে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের উন্নয়নের ইতিহাস তুলে ধরে বলা হতে পারে, “জনগণই রাষ্ট্রক্ষমতার মালিক; অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই তারা সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করেন।”
সিইসি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে “বৃহৎ কর্মযজ্ঞ” হিসেবে উল্লেখ করে বলতে পারেন, ৩০০ আসনে ভোট গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নতুনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষায় ইসি দিনরাত কাজ করছে—এমন বার্তাও থাকতে পারে ভাষণে।
ভোটার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করে বলা হতে পারে, “অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে সকলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।”
রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি এবং আচরণবিধি মেনে চলার আহবান জানাতে পারেন সিইসি। জালভোট, ব্যালট ছিনতাই, কালো টাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার রোধে জনগণের সহযোগিতাও চাইতে পারেন তিনি।
এ ছাড়া সহিংসতা ও সংঘাত এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে ভোটারদের স্বাধীনভাবে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহবান জানানো হতে পারে।
সবশেষে তিনি আশা প্রকাশ করতে পারেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হবে এবং এতে গণতন্ত্র আরও সুসংহত হবে।
