স্টাফ রিপোর্টার টাঙ্গাইল:
টাঙ্গাইল পৌর শহরের ৩নং ওয়ার্ডের স্টেডিয়াম ব্রিজ সংলগ্ন লৌহজং নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া দুই শিশুর মধ্যে মেহেদী হাসান (৮) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। তবে নিখোঁজ অপর শিশু আব্দুল্লাহ হাসান আদিবকে (১০) এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। নিখোঁজের প্রায় তিন ঘণ্টা পর বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে মেহেদীর মরদেহ নদীর ভাটির দিকে কয়েকশ’ গজ দূরে থেকে উদ্ধার করা হয়।
নিহত মেহেদী হাসান পৌর এলাকার পশ্চিম আকুর টাকুরপাড়া এলাকার মো. শফিকুল ইসলামের একমাত্র সন্তান। সে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। নিখোঁজ আদিব একই এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান, মেহেদী, আদিব এবং লাবীব—তিন বন্ধু মিলে স্টেডিয়াম ব্রিজের পাশে লৌহজং নদীর পাড়ে মাছ ধরতে যায়। এ সময় পা পিছলে মেহেদী ও আদিব নদীতে পড়ে যায়। এদের বাঁচাতে চেষ্টা করলেও স্রোতের কারণে লাবীব সফল হননি। শিশুদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার এস এম হুমায়ুন কার্ণায়েন জানান, “দুপুর ২টার দিকে ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। নদীর তলদেশে প্রচুর ময়লা-আবর্জনা থাকায় অভিযান ব্যাহত হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় একটি নৌকা ব্যবহার করে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হয়। বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে মেহেদীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।”
তিনি আরও জানান, “আলোক স্বল্পতার কারণে বুধবার সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ফজরের নামাজের পর অভিযান আবার শুরু হবে।”নিহত মেহেদীর মা অন্তরা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, “স্কুল থেকে ফিরে প্রতিদিনের মতো খেয়ে দুপুরে খেলতে বেরিয়েছিল মেহেদী। কিছুক্ষণ পর খবর পাই, সে নদীতে পড়ে গেছে। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে আমি দিশেহারা।”এদিকে, মেহেদী নিহত এবং আদিব নিখোঁজ থাকার খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
সংবাদ পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় নিহত মেহেদী ও নিখোঁজ আদিবের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ছুটে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু ও জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহিন। তারা দুই পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।