বুধবার (২১জুন) বেলা ১২টার পর গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা পশ্চিমা গণতন্ত্র ফলো করি। ব্রিটেনে কীভাবে নির্বাচন হয়, তারা কীভাবে করে, আমরা সেভাবে করব। আমরা এইটুকু উদারতা দেখাতে পারি, সংসদে যেসব সংসদ সদস্য আছে, তাদের মধ্যে কেউ যদি ইচ্ছা প্রকাশ করে নির্বাচনকালীন তারা সরকারে আসতে চায়, আমরা নিতে রাজি আছি। এমনকি ২০১৪ সালে খালেদা জিয়াকেও আমি এ আহ্বান করেছিলাম, তিনি আসেননি।”
বিএনপি মাইক লাগিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “সরকার হটাবে। আমরা তো তাদের কিছু বলছি না। আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম তখন আমাদের নামতে দিয়েছে? হামলা করেছে, ২১ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে। নির্বাচন ঠেকাতে ৫০০ স্কুল পুড়িয়েছে। সাড়ে ৩ হাজার লোক ও ৩৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে। ২৭টি রেল পুড়িয়েছে। ৭০টি সরকারি অফিস পুড়িয়েছে। আন্দোলন করুক তারা কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যদি জ্বালাও-পোড়াও কিছু করতে যায়, কোনো মানুষকে যদি আবার পোড়ায়, তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না।”
সুইজারল্যান্ড সফরে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার পরিমাণ কমে যাওয়ার উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ধরে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “রোহিঙ্গাদের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার পরিমাণ কমে যাওয়ার উদ্বেগ প্রকাশ করি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ধরে রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছি।”
সুইস রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সংকট নিরসনে সুইজারল্যান্ডসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সুইজারল্যান্ডে ব্রিকসের বর্তমান চেয়ার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে ব্রিকস জোটে বাংলাদেশের যোগ দেয়ার আগ্রহের কথা জানাই। আগামী আগস্টে জোহানেসবার্গে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে জোটের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সম্ভাবনার কথা জানান দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট।”
কাতার সফর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কাতার সফরে গুরুত্ব পায় জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি। এ ছাড়া ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ পরবর্তী সময়ে কর্মহীন হয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের বিকল্প কর্মসংস্থানের বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন কাতারের আমির। চলতি বছর বাংলাদেশ সফরের বিষয়েও ইতিবাচক সাড়া দেন তিনি।”
কাতারে সাম্প্রতিক দুটি সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।