রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে কিছুটা উন্নতি দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাইয়ে সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৬৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরে ঘাটতি কমেছে প্রায় ১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ২১ শতাংশের বেশি।
রপ্তানি ও আমদানির প্রবৃদ্ধি
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের জুলাইয়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা গত বছরের জুলাইয়ের ৩৮২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২৭ কোটি ডলারে, যা আগের বছরের ৫২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের চেয়ে প্রায় ১৯.৫ শতাংশ বেশি।
বাণিজ্য ও আর্থিক হিসাবে পরিবর্তন
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই শেষে সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতি সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলারে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ ঘাটতি ছিল ১৪৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অন্যদিকে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৭১ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছর ছিল মাত্র ২৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
এফডিআই, রিজার্ভ ও রেমিট্যান্স
জুলাই মাসে নেট বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়ে দাঁড়ায় ১০৪ কোটি ডলারে, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল মাত্র ৩৮ কোটি ডলার। এ সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯.৮০ বিলিয়ন ডলারে, যা গত বছর ছিল ২৫.৮২ বিলিয়ন। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে (বিপিএম-৬) হিসাব করলে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলারে, যা এক বছর আগে ছিল ২০.৩৯ বিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহেও বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। জুলাইয়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের ১৯১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের তুলনায় প্রায় ২৯.৫ শতাংশ বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকলে ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয় না। কিন্তু ঘাটতি হলে বিদেশি ঋণের প্রয়োজন হয়। তাই দীর্ঘমেয়াদে চলতি হিসাব ইতিবাচক রাখা জরুরি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ সামনের দিনগুলোতে ধরে রাখা একটি চ্যালেঞ্জ হবে। তা না হলে চাপ সৃষ্টি হতে পারে।