সোমবার, অক্টোবর ২০, ২০২৫
No menu items!
বাড়িজাতীয়নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় উদ্বেগ নেই: ইসি সচিব

নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় উদ্বেগ নেই: ইসি সচিব

ভোটের জন্য বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেনি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ।

সোমবার (২০ অক্টোবর) তিন ঘণ্টাব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

এদিন সকালে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রাক-প্রস্তুতিমূলক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা হয়। বৈঠকের একগুচ্ছ আলোচ্য বিষয় তুলে ধরে সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ইসি সচিব।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এ বৈঠক সূচনা ছিল এবং ধাপে ধাপে আরও বৈঠক হবে বলে জানান তিনি।

ইসি সচিব বলেন, বিভিন্নভাবে আরও কিছু কাজ আমাদের করতে হবে পর্যাক্রমিকভাবে। আজকে এটা সূচনা ছিল এবং আমরা এর পরে ধাপে ধাপে অন্যদের সঙ্গে বা এককভাবে বা যৌথভাবে এসব জিনিস আরও ফাইন টিউন করবো। লক্ষ্য একটাই- অবাধ, সুষ্ঠু, পার্টিসিপেটরি একটা নির্বাচন। সবাই এ ব্যাপারে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ যে তারা একটা ভালো নির্বাচন দিতে চান।

নির্বাচনে নানান ধরনের চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলো আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় উঠে এলেও তা সবিস্তারে বলেননি ইসি সচিব। ‍তিনি দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভোটের উপযোগী রয়েছে।

সচিব বলেন, যে বিষয়গুলো আমি বললাম শুরুতেই সেগুলোর ব্যাপারে আমরা দেখলাম যে, সবাই মোটামুটিভাবে ওয়াকিবহাল এবং তাদের অভিজ্ঞতা থেকেই তারা এই জিনিসগুলো আলোচনায় চেয়েছিল। তফসিল থেকে ভোটের পরের আলোচনাটা বেশি প্রাধান্য পেয়েছে।

সভায় বাহিনীর সদস্য নির্বাচন নিয়ে কোনো ঝুঁকি দেখছেন কি না এবং আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি সেটা ভোটের জন্য কতটুকু উপযোগী জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা তফসিল ঘোষণা থেকে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত ইসির এখতিয়ারাধীন। আমাদের আলোচনার পরিমিতিটা এটুকু ছিল। বাকিটুকু নিয়ে আলোচনার এই মুহূর্তে সুযোগ নেই এবং আমরা করিওনি।

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কোনো ধরনের উদ্বেগ নেই বলে দাবি করেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আমি তাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) ভেতর উদ্বেগ দেখিনি। বরং এটা দেখেছি যে, তারা একটা ভালো ইলেকশনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচন করার মতো পরিবেশ অবশ্যই আছে এবং সেটা আরও সংহত করার জন্যই আজকের আলোচনা এবং এটা চলমান থাকবে।

বর্তমান পরিস্থিতি কিংবা পরে ভোটের সময় নিয়ে কোনো শঙ্কাও প্রকাশ করা হয়নি বলে জানান তিনি।

সচিব বলেন, আশঙ্কা প্রকাশ করার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। কেউ করেননি। আমি দ্বিতীয়বার এটা বললাম, তৃতীয়বারও বলছি আশঙ্কা প্রকাশের কোনো কারণ এখানে ছিল না।

এরইমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন ভোটের সময় মবের দৌরাত্ম্য নিয়ে বলেছিলেন, ভোটের সময় ৩০০ আসনে মবকারীরা ভাগ হয়ে যাবে। মব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইসি সচিব বলেন, আজ এ ধরনের কোনো কিছু আলোচনা হয়নি।

বিরাজমান পরিস্থিতিতে কোনো দল শঙ্কা প্রকাশ করলেও তার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বৈঠকের সংযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন সচিব।

দেশজুড়ে অগ্নিকাণ্ডের পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে শঙ্কা প্রকাশের পর ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আসলে সম্ভব কি না জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, আজকে এই সম্পর্কিত কোনো আলোচনাই হয়নি। আজকের আলোচনাটা ছিল মূলত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং আরও সুন্দর করার জন্য, প্রস্তুতিমূলক।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী, আনসার, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আজকে মতবিনিময়ে ডাকা হয়েছে। ভোটকেন্দ্র থেকে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয়, ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ, ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণে বডিওর্ন ক্যামেরাসহ পুলিশের-অন্তত ১৪টি বিষয় ছিল আলোচনায়।

ইসি সচিব বলেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা মোটামুটিভাবে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। মূলত পাঁচদিনের ডেপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম করা হয়। সেখানে একটা প্রস্তাব এসেছে- এটা যেন আটদিন করা হয়। নির্বাচনের আগে তিনদিন, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন পরবর্তীতে চারদিন। আমাদের ইনিশিয়াল প্রোগ্রামিং ছিল পাঁচ দিন। এখন প্রস্তাবনাটা আসছে আটদিন। এটা আমরা পরীক্ষা করে দেখবো।

এআই নিয়ে পর্যালোচনা

এআই নিয়েও কমিশন আরও পর্যালোচনা করছে। এরইমধ্যে পাওয়া ঘটনাগুলো চিহ্নিত করার অভিজ্ঞতা ধরে এগোতে চায় ইসি।

সচিব বলেন, এআই এর অপব্যবহারের ক্ষেত্রে এনটিএমসি পূজার সময় যে ব্যবস্থাটা নিয়েছিল, সেটা একটা সাকসেসফুল ইভেন্ট। সেটা আমরা ব্যবহার করতে পারি কি না এ বিষয়ে আমি এই মুহূর্তে যেটা বলতে চাচ্ছি- মঙ্গলবার আমাদের এ ব্যাপারে একটা সেমিনার আছে, ওয়ার্কশপ আছে। সেটাতে আমরা আরও কিছু তথ্য সন্নিবেশ করে এই জিনিসটা দেখবো।

পার্বত্য অঞ্চলে ভোটের সামগ্রী আনা-নেওয়ায় হেলিকপ্টার ব্যাহারের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার কথা হয়েছে।

সশস্ত্রবাহিনী মাঠে রয়েছে, তারা কীভাবে ভোটে কাজ করবে সে বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, সেনাবাহিনী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। ডেপ্লয়মেন্ট আছে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার। তাদের অবস্থানটা কী হবে সেটা আমরা বলেছি- নীতিগতভাবে তারা যে অবস্থানে; যে যার অবস্থানে আছেন আমরা এম্ফাসাইজ করেছি ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিং এর বিষয়টি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) সংশোধন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীকে যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে ইসি।

তিনি জানান, প্রত্যেকটা অর্গানাইজেশনে তাদের কিছু নিজস্ব ইন্টেলিজেন্স রয়েছে, তারা কালেক্ট করে শেয়ারিংটা হবে। করলে জিনিসটা আরও সুসংগত হবে।

সীমান্ত এলাকা, উপকূলীয় এলাকা বিবেচনায় কাজের ধরনের বিষয়টি তুলে ধরে আখতার আহমেদ বলেন, এটা সমন্বয় করলে বেটার হবে এবং এই কোঅর্ডিনেশনের ডিফারেন্ট লেভেলে ডিটারমাইন থাকে ক্লিয়ারলি এবং সেটার সঙ্গে কমান্ড স্ট্রাকচার রয়েছে। এরকম জায়গাগুলো নিয়ে আরেকটু ফার্নিশ করতে হবে।

আইনশৃঙ্খরা বাহিনীর যানবাহনের বিষয়টিও আলোচনায় তুলেছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, যানবাহন একটা সীমাবদ্ধতা, যানবাহনের স্বল্পতা রয়েছে। অন্যথায় রিকুজিশনের একটা পদ্ধতি আছে, সে পদ্ধতিগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।

সশস্ত্র বাহিনী আগামী নির্বাচনে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারে থাকবে নাকি তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে থাকবে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, এটার ব্যাপারে আরপিওটা সংশোধন হয়ে আসুক। দুটো মতামতই আছে। বাট তাদের কন্টিনিউয়েশনের পক্ষেই আলোচনা হচ্ছে- ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার-এ যেটা আছে। কিন্তু তা আরপিওর সঙ্গে সাংঘর্ষিকভাবে যেন না হয় সে জিনিসটা আমরা লক্ষ্য করবো।

ভোটের প্রচারে ড্রোন নয়, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারবে

ভোটের প্রচারে ড্রোনের ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে ইসি সচিব বলেন, ইউজ অব ড্রোনের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, নির্বাচনী প্রচারণায় ড্রোন ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহার করবে।

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ে ইলেক্টলেটল ইনকয়ারি কমিটি তফসিল ঘোষণা থেকে কাজ শুরু করবে।

এ নিয়ে ইসি সচিব জানান, তফসিল ঘোষণার প্রথম দিকে মোটামুটিভাবে একটু থিন আউট থাকে। কিন্তু গ্রাজুয়ালি যতক্ষণই আমরা নির্বাচনের তারিখের দিকে পৌঁছাই সে সময় এদের সংখ্যাটা বেড়ে যায়। একটা সীমিত সংখ্যক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শুরু থেকে কাজ করবেন।

ভোটে কোন বাহিনীর কত সদস্য

আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে আইজিপির দেওয়া তথ্য তুলে ধরে ইসি সচিব জানান, পুলিশের দেড় লাখ কর্মীবাহিনী থাকবে ভোটে। সবচেয়ে বেশি বাহিনীর সদস্য আসবে আনসার ভিডিপি থেকে। স্বরাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বডিওর্ন ক্যামেরা থাকবে; ড্রোনের ব্যবস্থা থাকবে। কাজেই ভিজিলেন্সটা অনেক বেশিই হবে। সবগুলো বাহিনী তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষিত করার একটা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

তিনি জানান, সেনাবাহিনীর সদস্যদের কথা বলা হয়েছে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ। আনসারের সংখ্যাটা আরেকটু বেশি। আনসার ভিডিপি প্রায় সাড়ে ৫ লাখ থেকে ৬ লাখ সদস্য। সংখ্যাগত হিসাবগুলো বিন্যাসের পরে ক্যাটাগরাইজেশনের পরে এটা আরও একটু সঠিক হবে। ওনারা মোটামুটিভাবে বলেছেন যে, তাদের সর্বোচ্চ যেটুকু দেওয়া সম্ভব সেটুকুই আমাদেরকে সরবরাহ করছে।

বাজেট চূড়ান্ত হবে পরে

আগামী ভোটে সব মিলিয়ে কত সংখ্যক নিরাপত্তা সদস্য থাকবে এবং তাদের বাজেট বরাদ্দ এ বিষয়গুলো আরও পরে চূড়ান্ত হবে বলে জানান ইসি সচিব।

আখতার আহমেদ বলেন, আজকে সূচনা এটা। এখন কনক্লুসিভ কোন কিছু না। এটা তো ধারাবাহিকভাবে চলবে। আরেকটা বড় জিনিস আছে যেটা বাজেট। প্রত্যেকটা অর্গানাইজেশন প্রত্যেকটা ইউনিটে একটা বাজেট লাগবে, তাদের খরচ আছে। এটা ইলেকশন বাজেটের সঙ্গে সম্পর্কিত। নির্বাচন পরিচালনার কয়েকগুণ বেশি ব্যয় হয় নিরাপত্তায়। এবার প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রয়েছে। সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট ব্যয় প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা।

সোমবার সকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ মতবিনিময় সভা শুরু হয়। ভোট প্রস্তুতির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসির প্রথম বৈঠক এটি। সংলাপে চার নির্বাচন কমিশার, ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান ও প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, সেনাবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি লেফট্যানেন্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, বিমানবাহিনীর প্রধানের প্রতিনিধি এয়ার ভাইস মার্শাল রুশাদ দিন আসাদ, নৌবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।

এছাড়া এনএসআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সরোয়ার ফরিদ, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়াল অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, ঢাকার র‍্যাব হেডকোয়ার্টারের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, এসবির অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (প্রশাসন ও অর্থ) জি এম আজিজুর রহমান এবং সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. ছিবগাত উল্ল্যাহ উপস্থিত ছিলেন।

Notify of
guest
0 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ