শনিবার, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪
No menu items!
বাড়িজাতীয়পদত্যাগ করে‌ছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর

পদত্যাগ করে‌ছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ ক‌রে‌ছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সং‌শ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত ক‌রে‌ছেন।

ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছর আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর খোঁজ মিলছে না গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে আসছেন না। অনেকে বলছেন, দেশ থেকে পালাতে তিনি অনেক মহলে দেনদরবার করে যাচ্ছেন।

সবশেষ গত রোববার অফিস এসে বেশিক্ষণ থাকেননি গভর্নর।

এদিকে গত বুধবার (৭ আগস্ট) নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। ওইদিন বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর। তারা হলেন– কাজী সাইদুর রহমান, খুরশীদ আলম, হাবিবুর রহমান এবং নুরুন নাহার। এর মধ্যে কাজী সাইদুর রহমান ক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সাদা কাগজে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন।

অন্যরা পদত্যাগ করবেন জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ত্যাগ করেন। আর বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এবং নীতি উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাসেরকে বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারী কর্মকর্তারা।

পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটল বলে জানান জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা ব‌লেন, ব্যাংক খাতের ভঙ্গুরতার কারণে দেশে অর্থনীতির আজকের এই খারাপ অবস্থা তৈরি হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ কষ্টে আছে। এখন শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্র সংস্কারের দাবির সঙ্গে তারা সহমত পোষণ করে অবিলম্বে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান। গভর্নরসহ বিভিন্ন অনিয়মে দায়ী এসব কর্মকর্তা যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া যেসব নির্বাহী পরিচালক অনিয়মে সহায়তা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

‘ডি গ্রেড’ গভর্নর তালুকদার

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের নিয়ে একটি গ্রেডিং সূচক প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ওই সূচকে পেয়েছেন ‘ডি গ্রেড’। বাংলাদেশের অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বলতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছে গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিন। একই সঙ্গে বহিস্থ খাতের অনিশ্চয়তা ও চাপের মুখে অর্থনীতি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।

২০২২ সালের ১২ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার যোগদান করেন। তিনি ফজলে কবিরের স্থলাভিষিক্ত হয়ে দেশের ১২তম গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর আগে ছিলেন অর্থসচিব। শেখ হাসিনার সরকারে নীতিনির্ধারণে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের একজন হলো তালুকদার। গভর্নর হওয়ার আগে অর্থসচিব থাকা কালেই তিনি নানা নীতি প্রণয়ন, এস আলম বেক্সিমকো, আবুল খায়ের, নাসাসহ অনেক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ সুবিধা দিয়েছেন।

রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেয়ার পর ব্যাংকগুলোর অনিয়ম রোধে কিছু পদক্ষেপ নিলেও কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে আবার তিনি বেশ নমনীয়। যেমন শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর অনিয়ম রোধে তিনি ছিলেন নিষ্ক্রিয়। উল্টো অনৈতিক ও নী‌তি ভঙ্গ ক‌রে নানা সু‌যোগ সু‌বিধা দেয়। এসব বিষয়ে যেন গণমাধ‌্যমে নিউজ না হয় এজন‌্য সাংবা‌দিক প্রবে‌শে দেয় নি‌ষেধাজ্ঞা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন তথ‌্য নি‌য়ে ক‌রে লুকচু‌রি।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মানবতার সেবায় কালিয়াকৈর গ্রুপ

টিভিতে আজকের খেলা