ফিলিস্তিনের গাজামুখী নৌবহর থেকে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক কর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোর রাতে তাদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শেয়ার করা ১২ সেকেন্ডের এক ভিডিও দেখা যায়, এক ইসরায়েলি সেনা গ্রেটা থুনবার্গকে আটকের পর তার জিনিসপত্র হস্তান্তর করছে।
এরই মধ্যেই সুমুদ ফ্লোটিলার বেশ কয়েকটি জাহাজ আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। জাহাজগুলোর যাত্রীদের ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গ্রেটা ও তার বন্ধুরা নিরাপদ এবং সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নৌবহরের হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে শুরু থেকেই দাবি করে আসছে ইসরায়েল। তবে এর পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি তারা। এরই মধ্যে বুধবার রাতে নৌবহরটি থামাতে তৎপরতা শুরু করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। নৌবহরটির দিক পরিবর্তন করতেও নির্দেশ দেয় তারা। এমন পরিস্থিতিতে বহরটিতে হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
এর আগে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী সংগঠিত সুমুদ ফ্লোটিলার বেশ কয়েকটি জাহাজ ঘেরাও করে ইসরায়েলি সেনারা। আলজাজিরার তথ্য অনুসারে, গাজা উপকূল থেকে ৮০ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ১৪৯ কিলোমিটার) দূরে ছিল জাহাজগুলো। এর মধ্যেই বেশ কিছু জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এর আগে সুমুদ ফ্লোটিলার আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সন্দেহজনক বেশ কিছু জাহাজ নৌবহরের অন্তর্ভুক্ত জাহাজগুলোর চারপাশে চলছে। এগুলো ইসরায়েলের নৌবাহিনীর জাহাজ হিসেবে সন্দেহ করছেন তারা।
নৌবহরে থাকা আলজাজিরার প্রতিনিধি হায়াত ইয়ামানি জানান, তার জাহাজের আশপাশে অন্তত ১২টি সন্দেহজনক জাহাজ ঘিরে রয়েছে।
সুমুদ ফ্লোটিলা সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার একটি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা। এই নৌবহরে রয়েছে ৪০টির বেশি বেসামরিক নৌযান। এই বহরে ৪৪ দেশের ৫০০ মানুষের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, অধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিক।
এই বহরে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। তিনি মঙ্গলবার ইতালির একটি বন্দর থেকে ফ্লোটিলার প্রধান নৌযান কনশানসে ওঠেন।