ইয়েমেনের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল ঘেষা লোহিত সাগরে একটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা হয়েছে।
রবিবার (৬ জুলাই) লোহিত সাগরে ওই জাহাজ লক্ষ্য করে অন্তত আটটি ছোট নৌকা থেকে গুলি এবং রকেটচালিত গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় বলে জানায় ব্রিটেনের সমুদ্র নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন অ্যাজেন্সি (ইউকেএমটিও)।সংস্থাটির বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, এই ঘটনায় জাহাজে থাকা সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীরাও পাল্টা গুলি চালালে সেখানে গোলাগুলি হয়। তবে এই হামলার দায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি। চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে ওই অঞ্চলে এটিই এ ধরনের প্রথম হামলার ঘটনা। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ এবং সম্প্রতি ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মাঝেই লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ আক্রান্ত হওয়ার খবর এল।
ব্রিটিশ মেরিটাইম সুরক্ষা সংস্থা অ্যামব্রে বলেছে, ইয়েমেনের হোদাইদা বন্দর থেকে ৫১ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে ব্রিটিশ এই দুই সংস্থা আক্রান্ত জাহাজের নাম প্রকাশ করেনি।
ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক সামুদ্রিক হামলা চালিয়েছে। গোষ্ঠীটি বলেছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এই হামলা চালাচ্ছে তারা।
গাজায় যুদ্ধকালীন লোহিত সাগর ও এডেন উপকূলে অন্তত দুটি জাহাজ ডুবিয়ে দেয় হুথিরা। পাশাপাশি পশ্চিমা একটি জাহাজ ছিনতাই ও অন্তত চার নাবিককে হত্যা করেছে ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। হুথিদের হামলায় সমুদ্রপথের বৈশ্বিক যোগাযোগব্যবস্থা মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে। অনেক কোম্পানি বিকল্প রুট ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনে বাধ্য হওয়ায় খরচও বেড়ে গেছে। হুথিদের ক্রমবর্ধমান হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রও গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা বৃদ্ধি করেছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত মে মাসে ইয়েমেনে হুথিদের ওপর বিমান হামলা বন্ধ করার ঘোষণা দেন। ওই সময় তিনি জানান, গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথে হামলা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।
চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং হুথি- কোনো পক্ষই একে অপরকে নিশানা করবে না বলে শর্ত দেওয়া হয়। এমনকি লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দাব প্রণালীতেও হামলা বন্ধ রাখার শর্ত মেনে নেয় হুথি। সেই সময় এক বিবৃতিতে হুথিদের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল ওমান।
তবে গত জুনে হুথিরা হুমকি দেয়, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যদি অংশ নেয়, তাহলে তারা লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজগুলোতে হামলা করবে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় গত মাসে হামলা চালানোর পর হুথিরা সেই হুমকি বাস্তবায়ন করবে কি না এখন সেটিই দেখার বিষয়।