জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের ঠিক আগে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলো ফ্রান্স। এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, কানাডা ও পর্তুগালের পর ফ্রান্সও পশ্চিমা দেশগুলোর সেই তালিকায় যোগ দিলো, যারা সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এই স্বীকৃতিকে ইসরায়েলের ওপর কূটনৈতিক চাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে এমন সময়ে এই ঘোষণা এলো যখন গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং পুরো অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেন, ‘আজ আমি ঘোষণা করছি, আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছি।’ তিনি শান্তির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনাকে রক্ষা করতে হবে।’
তবে যুক্তরাষ্ট্র এই স্বীকৃতির সমালোচনা করেছে। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর এ ধরনের সিদ্ধান্ত হামাসকে আরও উৎসাহিত করবে এবং যুদ্ধ থামানো আরও কঠিন করে তুলবে।
চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্কে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশন, যেখানে ১৪০টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশ নেবেন। এবারের বৈঠকে ফিলিস্তিন ইস্যু এজেন্ডার শীর্ষে থাকার কথা রয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না, কারণ যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আন্দোলন দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি বড় দেশ একে একে এগিয়ে আসায় বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া একযোগে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তাদের পরপরই একই ঘোষণা আসে পর্তুগালের পক্ষ থেকে। আজ স্বীকৃতি দিলো ফ্রান্স। এর আগেই চলতি বছরের ২০ মার্চ মেক্সিকো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৫১টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশ। তবে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো এতদিন ধরে দ্বিধায় ছিল। সেই চিত্র এবার বদলাতে শুরু করেছে।