ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় একদিনে অন্তত ১৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ। চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
একটি সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ১০ জনে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা ও তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে আহত হয়েছেন আরও ১৫২ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন। অনেকের মরদেহ এখনো রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
আল জাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনী নতুন করে হামলা শুরু করে। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের একটি মেডিকেল ক্লিনিকেও বিমান হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলায় ক্লিনিকটির ওপরের তলায় থাকা রোগীরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যান। নিহতদের মধ্যে শিশু রয়েছে। ওই হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হন।
দীর্ঘ ১৫ মাসের সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। কিন্তু মাত্র দুই মাসের মাথায় মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ফের হামলা শুরু করে দেশটি।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন দফার ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৮৭৬ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৮ হাজার।
জাতিসংঘ বলছে, চলমান হামলায় গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অবরুদ্ধ উপত্যকাটির অধিকাংশ অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। একইসঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলা চলছে।