কৃষি বর্জ্য থেকে নতুন সম্ভাবনা খুঁজছে তাইওয়ান। কলা গাছের আঁশ দিয়ে কাপড় বানিয়ে তাক লাগাচ্ছে ভূখণ্ডটির একজন উদ্যোক্তা। নেলসন ইয়াং নামের ওই উদ্যোক্তা কলা গাছের আঁশ ব্যবহার করে টেকসই টেক্সটাইল তৈরি করছেন।
আর এটিই একদিন পৌঁছাতে পারে বৈশ্বিক স্নিকার ব্র্যান্ডগুলোর কাছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, নেলসন ইয়াং নামে তাইওয়ানের এক উদ্যোক্তা নিজেদের ইতিহাস থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে কলা গাছের আঁশ দিয়ে টেকসই কাপড় তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন।
মূলত তাইওয়ানের চ্যাংহুয়া অঞ্চলে ইয়াংয়ের প্রতিষ্ঠান ফার্ম টু ম্যাটেরিয়াল কলার আঁশ থেকে এমন টেক্সটাইল তৈরি করছে, যা ভবিষ্যতে বৈশ্বিক স্নিকার ব্র্যান্ডগুলোতে সরবরাহ করা যেতে পারে।
ইয়াং বলেন, “২০০৮ সালে ইউরোপের কিছু স্নিকার ব্র্যান্ড জানায়, তারা চাইছে একই জমি থেকে যেন খাদ্য ও উপকরণ একসাথে উৎপাদন করা যায়। সেই ধারণা থেকেই আমরা কাজ শুরু করি। এখন আমরা নিশ্চিত করছি যে আমাদের সব কাঁচামাল আসছে কৃষি বা খাদ্য শিল্পের বর্জ্য থেকে, যেগুলো আমরা ব্যবহারযোগ্য উপকরণে রূপান্তর করছি।”
১৮৯৫ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপানি শাসনামলে তাইওয়ান আনারস ও কলার মতো ফলের জন্য বিখ্যাত ছিল। ষাটের দশকে দ্বীপটি রপ্তানি বাড়াতে নিজেকে “বানানা কিংডম” হিসেবে প্রচার করেছিল। তবে বর্তমানে কলার জায়গা নিয়েছে প্রযুক্তি শিল্প।
ইয়াংয়ের কোম্পানি কলা গাছের মাঝের অংশ — যা সাধারণত কলা কাটার পর মাঠেই ফেলে দেওয়া হয় — তা সংগ্রহ করে চেপে ও শুকিয়ে আঁশ তৈরি করছে। এসব আঁশ থেকে কাপড় তৈরি সম্ভব।
কিছু আঁশ আবার সুতো বানিয়ে তুলার সাথে মিশিয়ে মোজা বানানো যায়, আবার তা থেকে তৈরি হয় ভেগান লেদারও। তবে এই কাজটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে, এখনো কোনো পোশাক ব্র্যান্ড থেকে তাদের কাছে অর্ডার আসেনি।
তাইওয়ান টেক্সটাইল ফেডারেশনের ইনোভেশন ও সাসটেইনেবল ডিজাইন বিভাগের পরিচালক শার্লট চিয়াং বলেন, “কলার আঁশ তুলার তুলনায় পানির ব্যবহার, শোষণ ক্ষমতা ও সরবরাহ স্থিতিশীলতার দিক থেকে অনেক ভালো পারফর্ম করে। ফলে ভবিষ্যতে এটির ব্যবহার সম্ভাবনাময়।”
তিনি আরও বলেন, “টেক্সটাইল শিল্পে বায়োমাস আঁশের ক্ষেত্রে কলার আঁশ তাইওয়ানের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে।”