পাকিস্তানের কোয়েটা শহরের আকাশে দেখা গেল বিরল এক দৃশ্য। আকাশকে তখন দেখাচ্ছিল বর্ণিল রঙে ঢেউখেলানো, অনেকটা রংধনুর মতো। মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগে বর্ণিল এ দৃশ্য দেখা যায়। আবহাওয়াবিদদের মতে, এটি ছিল ‘লেন্টিকুলার ক্লাউড’ বা লেন্টিকুলার মেঘের স্তর।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তর (পিএমডি) এক বিবৃতিতে বলেছে, কোয়েটায় এটি ছিল বিরল ‘লেন্টিকুলার মেঘের গঠন’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘২০২৫ সালের ২৮ অক্টোবর ভোরের দিকে কোয়েটা শহরের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত কোহ-ই-মুরদার পর্বতের ওপর এই লেন্টিকুলার মেঘের স্তর দেখা যায়। মেঘটি সূর্যোদয়ের ঠিক আগে দেখা গিয়েছিল, প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী ছিল এবং সূর্যোদয়ের ঠিক আগেই তা মিলিয়ে যায়।’
অনেকেই এই মেঘের গঠনকে ‘কন্ট্রেইল ক্লাউড’ হিসেবে অভিহিত করেন। একটি উড়জোহাজের ঘোরাঘুরি ফলে এই অস্বাভাবিক মেঘের স্তর সৃষ্টি হতে পারে বলে তাঁরা মনে করেন।
এই বিরল দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এ ঘটনাকে আকাশে উড়োজাহাজ চলাচলের ফল বলে মনে করেন। কেউ কেউ আবার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ফলে এমনটি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
তবে জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের মুখপাত্র আনজুম নাজির জাইগুম বলেন, ‘যখন স্থির ও আর্দ্র বাতাস মেঘের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন তা আকাশে ঢেউয়ের মতো সৃষ্টি করে।’
আনজুম নাজির আরও বলেন, ‘সাধারণত পাহাড়ের কুয়াশাচ্ছন্ন চূড়ায় এ ধরনের মেঘের স্তর সৃষ্টি হয় এবং তা কিছুক্ষণের মধ্যেই জলীয় বাষ্প আকারে মিলিয়ে যায়।’
এ ধরনের পরিবেশগত ঘটনা আকাশে ঢেউখেলানো কিংবা মহাকাশের মতো আকার তৈরি করে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লাতিন শব্দ ‘লেন্টিকুলারিস’ থেকে এসেছে এই মেঘের নাম, যার অর্থ ‘লেন্স আকৃতির’। এই লেন্টিকুলার মেঘ হলো সবচেয়ে বিরল মেঘের মধ্যে একটি। এই মেঘ সাধারণত পাহাড় বা টিলার কাছে তৈরি হয়, যখন বাতাস স্থির ও আর্দ্র থাকে।
বাতাস যখন কোনো পাহাড় বা টিলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন এটি স্থির ঢেউয়ের মতো একটি মেঘের স্তর তৈরি করে। সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের সময় যখন আলো এই মেঘের ওপর পড়ে, তখন ব্যতিক্রমী লালচে বা বর্ণিল আভা তৈরি হয়।
