গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার আহাম্মেদ বর্তমানে এক মানবিক ও কর্মনিষ্ঠ প্রশাসক হিসেবে এলাকায় বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি সমাজের হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
কালিয়াকৈরে যোগদানের আগে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কালিয়াকৈরে যোগদানের পর থেকে উপজেলার প্রশাসনিক ও সামাজিক চিত্রে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে মাঠ পর্যায়ে নিরলসভাবে কাজ করছেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আগত প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ ও সহযোগিতার মানসিকতার জন্য তিনি স্থানীয়দের ভালোবাসা অর্জন করেছেন।
একটি নৌকাডুবি দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারের মাঝে তিনি নিজ হাতে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন, যা মানবিকতার এক অনন্য উদাহরণ।
ঈদ ও পূজা উপলক্ষে ঢাকা‑টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট নিরসনেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রশাসনিক তদারকি করেছেন, যাতে উৎসবকালীন চলাচলে কোনও বিঘ্ন না আসে।
বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ইভটিজিং, মাদকদ্রব্যের বিস্তার, নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার, রেজিস্ট্রেশনবিহীন যানবাহন চলাচল, অবৈধ ইটভাটা সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।
স্থানীয়রা বলেন, “মানবিকতার এমন দৃষ্টান্ত খুব কম দেখা যায়।আগে সেবা নেওয়ার সময় অনেক জটিলতা থাকত, কিন্তু এখন সহজভাবে প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়া যাচ্ছে। প্রশাসনের এই স্বচ্ছতা এবং দ্রুততার কারণে আমরা অনেক স্বস্তি পাচ্ছি আমরা চাই তিনি দীর্ঘদিন মানুষের সেবা করে যান।”
নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে ইউএনও কাউছার আহাম্মেদ বলেন,“সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজগুলো সঠিক সময়ে গ্রহণ করা, বাস্তবায়ন করা ও তদারকি করা বর্তমান সময়ে একটি বড় চ্যালেঞ্জ, আমরা সেই কাজগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করছি।
একইসাথে, সরকার প্রদত্ত যে নাগরিক সেবাগুলো আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষ ইতোমধ্যেই এসব সেবার সুফল পাচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ, কালিয়াকৈরবাসী আজ তুলনামূলকভাবে উন্নত ও মানসম্মত সেবা পাচ্ছেন এটি সাধারণ মানুষের মতামত থেকেই আমরা বুঝতে পারি।
এছাড়া, গরিব-দুঃস্থ সাধারণ মানুষ এবং সমাজে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত যে ঘটনাগুলো আমাদের সমাজে ঘটে সেগুলো যথাসময়ে খুঁজে বের করে সেগুলো সমাধানের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আমরা সবসময় বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ে এবং বিভিন্ন সেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে কাজগুলো তদারকি করি, এবং সেই সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি।
সার্বিকভাবে এই কাজগুলো প্রশাসনের কার্যক্রমে নতুন উদ্দীপনা ও আস্থা তৈরি করছে। আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করি, যেন ভবিষ্যতে আমাদের উন্নয়ন ও সেবা কার্যক্রম আরও সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং সাধারণ জনগণ সহজেই সরকারি সেবাগুলো গ্রহণ করতে পারে।”
তথ্য সূত্র ঃ দৈনিক নেত্রপ্রকাশ