দীর্ঘ ৩৫ বছরের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটার সংখ্যা ২৭,৫১৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৬,১৮৯ এবং ছাত্রী ১১,৩২৯ জন। মোট ২৬টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী। ভোট গ্রহণ চলছে ১৪টি আবাসিক হল (৯টি ছাত্র ও ৫টি ছাত্রী) ও শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলসহ ১৫টি কেন্দ্রে। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত একটি কেন্দ্র স্থাপন করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে ব্যবহার করা হচ্ছে ৭০০টি ভোট বুথ, প্রতিটিতে থাকছে ৫টি ব্যালট বাক্স ও ৫ জন এজেন্ট। একেকটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৫০০ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। প্রতিটি ভোটার পাঁচটি ব্যালটে মোট ৪০ জন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। ভোট হবে ব্যালট পেপারে, আর গণনা হবে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পদ্ধতিতে।
ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্রীয় সংসদের ফলাফল ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ থেকে এবং হল সংসদের ফলাফল নিজ নিজ কেন্দ্র থেকে প্রকাশ করা হবে।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে সহায়তার জন্য চালু করা হয়েছে বিশেষ ১১ বার শাটল ট্রেন ও ৩০টি বাস সার্ভিস। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি মিলিয়ে প্রায় ১,৭০০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরাও।
চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মুনির উদ্দিন বলেন, “শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সে লক্ষ্যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালে। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।