নিজস্ব একটি বাড়ি নির্মাণ বা কেনার স্বপ্ন সবারই রয়েছে। এটি শুধু স্বপ্ন নয়—নিরাপত্তা, স্থায়িত্ব ও পরিবারের ভবিষ্যতের অন্যতম প্রতীক। তবে বাড়ি নির্মাণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় আর্থিক সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা। দীর্ঘদিনের সঞ্চয় দিয়েও অনেক সময় কাঙ্ক্ষিত বাড়ি তৈরি সম্ভব হয় না।
এ পরিস্থিতিতে আধুনিক আর্থিক ব্যবস্থার হোম লোন এখন মধ্যবিত্তসহ বিভিন্ন আয়ের মানুষের জন্য কার্যকর সমাধান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সহজ শর্তে কাদের জন্য এবং কীভাবে এই সুবিধা পাওয়া যায়, তা জানতে আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন।
হোম লোনের ধরন ও সুবিধা
হোম লোন হলো দীর্ঘমেয়াদি ঋণসুবিধা, যার মাধ্যমে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহককে বাড়ি কেনা, নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণ বা বিদ্যমান বাড়ি সংস্কারের জন্য অর্থ প্রদান করে। এতে একসঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা পরিশোধের চাপ থাকে না; বরং ১৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে সহজ কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়।
অনেক ব্যাংকেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অতিরিক্ত চার্জ ছাড়াই পুরো ঋণ বা আংশিক ঋণ পরিশোধের সুবিধা রয়েছে, যা গ্রাহকের আর্থিক ঝুঁকি কমায়।
নিরাপত্তা ও আইনগত যাচাই
হোম লোন নেওয়ার আগে সম্পত্তির বৈধতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য বেশিরভাগ ব্যাংকই লিগ্যাল ও টেকনিক্যাল টিমের মাধ্যমে জমির কাগজপত্র, মালিকানা ও নির্মাণ অনুমোদন যাচাই করে থাকে।
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড—ইবিএল—জানায়, তারা শুধু ঋণই দেয় না; গ্রাহকেরা যেন ঝুঁকিমুক্ত সম্পত্তি কিনতে পারেন, সেটিও নিশ্চিত করে। এতে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতার সম্ভাবনা কমে যায়।
কারা হোম লোন নিতে পারবেন?
সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসকসহ স্বনির্ভর পেশাজীবীরা হোম লোন নিতে পারেন। প্রয়োজনীয় নথির মধ্যে রয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র
ছবি
আয়ের প্রমাণ
গত এক বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
ই-টিআইএন ও রিটার্ন
জমির দলিল বা মালিকানার প্রমাণ
আইপিডিসি ফাইন্যান্সের হেড অব রিটেইল বিজনেস মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, “হোম লোন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া—এমন ধারণা এখন পুরোনো। বর্তমান ব্যবস্থা অনেক সহজ, এবং সম্পত্তির বৈধতা যাচাইয়েও ব্যাংকগুলো সক্রিয় ভূমিকা রাখে।”
সুদের হার ও বিশেষ অফার
হোম লোনের সুদের হার ব্যাংকভেদে পরিবর্তিত হয়। বাজার পরিস্থিতি, গ্রাহকের আয় এবং পরিশোধ ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে সুদের হার নির্ধারিত হয়।
ইবিএল, আইপিডিসিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক সুদের হারে ঋণ দিচ্ছে। পাশাপাশি অনেক ব্যাংক হোম লোন গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফারও দিচ্ছে।
ইবিএলের চলমান এক্সক্লুসিভ ক্যাম্পেইনে গ্রাহকেরা কনকর্ড, বার্জার, আকিজ সিরামিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট কুপন পাচ্ছেন, যা নতুন বাসা সাজাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যা ভাবা জরুরি
বাড়ি কেনা বা নির্মাণ একটি দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক বিনিয়োগ। তাই হোম লোন নেওয়ার আগে আয়ের স্থায়িত্ব, ব্যয়ের ধরন, ভবিষ্যতের আর্থিক পরিকল্পনা ও সঞ্চয়ের লক্ষ্য পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা ও সঠিক পরিকল্পনা থাকলে নিজের বাড়ির স্বপ্ন পূরণ আর অসম্ভব নয়।
