অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন আয়োজন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত গণ বিশ্ববিদ্যালয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয় পেয়েছেন ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের মো. রায়হান খান এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) নির্বাচিত হয়েছেন সামিউল হাসান শোভন।
রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল আলম আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে ভিপি পদে মৃদুল দেওয়ান পেয়েছেন ৬৯২ ভোট, যেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আব্দুল মাজেদ সালাফী পেয়েছেন ৬৭৭ ভোট।
শিবির-সমর্থিত জিএস প্রার্থী রায়হান খান পেয়েছেন সর্বোচ্চ ১১২১ ভোট, পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী মো. অন্তু দেওয়ান পেয়েছেন ৮১০ ভোট। এজিএস পদে শিবির-সমর্থিত সামিউল হাসান শোভন পেয়েছেন ১৪০০ ভোট, যেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিফাতুর রহমান শিশির পেয়েছেন ১২৩৯ ভোট।
নির্বাচনের অন্যান্য ফলাফল:
কোষাধ্যক্ষ: খন্দকার আব্দুর রহিম – ১৪৫০ ভোট
ক্রীড়া সম্পাদক: ফয়সাল আহমেদ – ১৪৭৭ ভোট
সহ-ক্রীড়া সম্পাদক: আব্দুল্লাহ আল নোমান – ১৩০৭ ভোট
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক: মো. মারুফ – ২৩৯৪ ভোট
সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক: লীশা চাকমা – ২১৯৫ ভোট
দপ্তর সম্পাদক: শারমিন আক্তার – ১১০৮ ভোট
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: মো. জান্নাতুল ফেরদৌস – ১৮৭৬ ভোট
সমাজকল্যাণ ও ক্যান্টিন সম্পাদক: মো. মনোয়ার হোসেন অন্তর – ১১৪৯ ভোট
অনুষদভিত্তিক প্রতিনিধিরা:
কৃষি অনুষদ: মহিউল আলম দোলন
ভেটেরিনারি অনুষদ: মো. হুমায়ুন কবির
কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়): শাকিল আহমেদ, মো. সেলিম আহমেদ অলি, মো. মেহেদি হাসান, মিনতুজ আক্তার মিম
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ: মেহেরুন খিলজি মিতু, মো. ইমদাদুল হক মিলন
স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদ: নাশরুন সেঁজুতি অরণি, পার্থ সরকার
ভোটগ্রহণ ও নিরাপত্তা:
সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। ৪,৬৭২ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ফলাফল গণনা ও ঘোষণা চলে টানা প্রায় ১২ ঘণ্টা। নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল প্রায় ৪০০ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
তবে গণনা কক্ষে প্রার্থীদের এজেন্টদের উপস্থিত না রাখা এবং সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করায় কিছুটা অসন্তোষ তৈরি হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে গকসুর প্রথম নির্বাচন হয়। এরপর ২০১৮ সালে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল। প্রায় সাত বছর পর এবার অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ গকসু নির্বাচন।