বুধবার, অক্টোবর ১৫, ২০২৫
No menu items!
বাড়িজাতীয়ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: টাঙ্গাইল-৫ আসনে বিএনপির একাধিক, জামায়াতের একক প্রার্থী মাঠে

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: টাঙ্গাইল-৫ আসনে বিএনপির একাধিক, জামায়াতের একক প্রার্থী মাঠে

ইমরুল হাসান বাবু, টাঙ্গাইল:

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে জমে উঠেছে রাজনৈতিক উত্তাপ। শিক্ষানগরী খ্যাত এই গুরুত্বপূর্ণ আসনটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বরাবরই বিশেষ গুরুত্ব বহন করে এসেছে। শহরাঞ্চলের পাশাপাশি বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল নিয়ে গঠিত এ আসনে অতীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি চারবার করে, জাতীয় পার্টি (জাপা) তিনবার এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার করে জয়লাভ করেছেন।
বর্তমান সরকার পতনের পর টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন কারাগারে থাকায় এই আসন ঘিরে রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে এ আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী ইতোমধ্যেই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন—দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও সাবেক যুবদল-ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আহমেদুল হক সাতিল এবং সাবেক এমপি খালেদা পান্নার ছেলে ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান প্লেটো।
দলের অভ্যন্তরে নেতাকর্মীরা মূলত সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও শাহীন-ফরহাদ ইকবালের পক্ষেই বিভক্ত হয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। তবে জাতীয় ও দলীয় কর্মসূচিতে এই প্রার্থীরা একসাথে কাজ করছেন, যা দলীয় ঐক্যের ইঙ্গিত দেয়।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এই আসনে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে জেলা শাখার আমীর আহসান হাবিব মাসুদকে। তিনি নিয়মিত গণসংযোগ করে দলকে সংগঠিত করতে সচেষ্ট রয়েছেন।
বিকল্পধারার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও নির্বাচনমুখী তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি আজাদ খান ভাসানী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি আলহাজ আকরাম আলী, খেলাফত মজলিসের মাওলানা ছানোয়ার হোসেন সরকার ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মুফতি শরিফুল ইসলাম কাসেমী ইতোমধ্যে মাঠে রয়েছেন। জাপা নির্বাচনে অংশ নিলে জেলার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে বিবেচিত হবেন বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং ভোটারদের মতে, বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকলেও সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ফরহাদ ইকবাল, হাসানুজ্জামিল শাহীন এবং খন্দকার আহমেদুল হক সাতিল এই চারজনের প্রতি ভোটারদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ায় তাঁর প্রতি দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের আস্থা তুলনামূলকভাবে বেশি। অন্যদিকে ক্লিন ইমেজ ও শহীদ ছোট ভাই শাওনকে হারানোর কারণে হাসানুজ্জামিল শাহীনের প্রতি মানুষের সহানুভূতিও কাজ করছে।
অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল চরাঞ্চলের ছেলে হওয়ায় সেখানে তার বিশাল ভোটব্যাংক রয়েছে। ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় এবং করোনা মহামারিতে সাধারণ মানুষের পাশে থাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা তুলনামূলক বেশি।
একইভাবে, সাবেক যুবদল নেতা খন্দকার আহমেদুল হক সাতিল পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী সংগঠক হিসেবে পরিচিত। শহরের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তার নেতৃত্বে বিশাল মিছিলের কারণে ভোটারদের মাঝে তার গ্রহণযোগ্যতাও উল্যেখযোগ্য।
তবে সাধারণ ভোটারদের একাংশ মনে করছেন, বিএনপি যদি দলীয় কোন্দল পরিহার করে ঐক্যবদ্ধভাবে একজন প্রার্থীকে নিয়ে মাঠে নামে, তবে এ আসনে তাদের জয় নিশ্চিত—এটা তারা প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলছেন।

Notify of
guest
0 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ