রাজশাহীর তানোরে প্রায় ৩০–৩৫ ফুট গভীর একটি পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু স্বাধীনকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে পড়ে যাওয়ার পর থেকে রাতভর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট টানা উদ্ধার অভিযান চালালেও তার অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত ছিল।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, মূল গর্তের পাশ থেকে কেটে সুড়ঙ্গ তৈরি করে শিশুটিকে বের করে আনার চেষ্টা চলছে। ৩৫ ফুট পর্যন্ত পৌঁছানো গেলেও শিশুটিকে দেখা যায়নি।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুজ্জামান বলেন, “উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব ইউনিট সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।”
ঘটনাটি ঘটেছে তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে। এলাকাটিতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপ স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে স্থানীয় এক ব্যক্তি পানি আছে কিনা যাচাই করতে গর্ত করেছিলেন। পরে সেটি ভরাট করা হলেও বর্ষায় মাটি দেবে আবার গর্ত তৈরি হয়। সেই গর্তেই পড়ে যায় শিশু স্বাধীন।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিশু স্বাধীন পড়ে গেলে প্রথমে স্থানীয়রা উদ্ধার চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তানোর, রাজশাহী সদর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইউনিটগুলো অভিযান শুরু করে। রাতভর একের পর এক এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি খোঁড়ার কাজ চলে। সেনাবাহিনী ও পুলিশও কাজে যোগ দেয়।
শিশুটির মা রুনা খাতুন বলেন,
“মাটিতে আটকে যাওয়া ট্রলি দেখতে এসে আমার সন্তান কোল থেকে নেমে যায়। কিছুটা হাঁটতেই হঠাৎ গর্তে পড়ে যায়। গর্তের ভেতর থেকে কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু এত গভীর যে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।”
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম জানান, “গর্তের পাশ কেটে সুড়ঙ্গ তৈরি করে উদ্ধার করতে হচ্ছে। কাজটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হচ্ছে।”
উদ্ধারস্থলে ভোর থেকেই শত শত মানুষের ভিড় দেখা যায়। ভিড় নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বেগ পেতে হচ্ছে। টানা দীর্ঘ সময়ের চেষ্টার পরও এখনো শিশুটির অবস্থান নিশ্চিত করা যায়নি। তবে বিরতি ছাড়াই উদ্ধার অভিযান চলছে।
