শুক্রবার, জুন ১৩, ২০২৫
No menu items!
বাড়িজাতীয়ঈদকে ঘিরে টাঙ্গাইলের কামারশিল্পে মন্দার ছায়া, কারিগরদের নেই তেমন কোন ব্যস্ততা

ঈদকে ঘিরে টাঙ্গাইলের কামারশিল্পে মন্দার ছায়া, কারিগরদের নেই তেমন কোন ব্যস্ততা

 

ইমরুল হাসান বাবু,স্টাফ রিপোর্টার: আর মাত্র একদিন পর ঈদ। তবে কামার পল্লীতে কোরবানির পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম নিয়ে অলস সময় পার করছেন কামারেরা।আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তেমন কেনো ব্যস্ততা নেই টাঙ্গাইল কামার শিল্পের কারিগরদের। যদিও এক সময় কোরবানির ঈদের দুয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখরিত থাকতো কামার শিল্পের দোকানগুলো। সময়ের পরিক্রমায় আর আধুনিক মেশিনে তৈরি চায়না সরঞ্জামে বাজার ছেয়ে যাওয়ায় কামারশিল্পে পড়েছে ভাটা।

সরেজমিনে টাঙ্গাইল পার্ক বাজারের কামারের দোকান গুলো ঘুরে দেখা যায়, দা, বটি, চাপাতি, ছুরি, দেশি কুড়াল,চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদির পসরা সাজিয়ে বসে আছেন কামাররা।

ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও জমে উঠেনি আগের মতো কামারিদের দোকানগুলো। কামার শিল্পীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ২’শ থেকে ৩’শ টাকা, দা ৬’শ থেকে ৯’শ টাকা, বটি ৯’শ থেকে হাজারেরও উপরে, পশু জবাই ছুরি ৮’শ থেকে দেড় হাজার টাকা, চাইনিজ কুড়াল ৮’শ, দেশিও কুড়াল ৬’শ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা।

তাদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, তাদের সকলেরই পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া এ পেশা। তাই তারা ঐতিহ্য হিসাবে ধরে রাখছেন এ পেশাকে।

কামার সত্যরঞ্জন দাস ও উদয় সরকারের সাথে কথা হয়। তাঁরা ৪০ বছর ধরে এই পেশার সাথে জড়িত।
তারা জানান, আগের মত আর তেমন কাজ নেই। এখন আমাদের এ পেশায় নুন আনতে পানতা ফুরানোর মত অবস্থা। সারা বছর কাজ না থাকায় মুসলমানদের ধর্মীয় এ উৎসবের অপেক্ষায় থাকি। তাতে কিছুটা হলেও পুষিয়ে উঠা যায়। বাপ-দাদার পেশা, এ পেশাই জীবন বাঁচাই, ছাড়তেও পারি না। তারপরেও কয়লার দাম বেশী হওয়ায় আমাদের হিমশিম খেতে হয়। এর সাথে কাজ করা লোক ও এখন আর পাওয়া যায় না, পরিশ্রম বেশি তাই এ পেশা থেকে লোক সরে যাচ্ছে । আগে কয়লা ও লোহার দাম কম ছিল তাই খাটা খাটনি করে ভালো দাম পাওয়া যেত। এখন তেমন টা হয় না।

তারা আরও বলেন, বাপ দাদার পৈত্তিক এই পেশায় জীবন বাঁচানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। আমাদের জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সরকার। তাই পেটের দায়ে পৈত্রিক পেশা ছেড়ে বাধ্য হয়ে অনেকেই এখন অন্য পেশায় ঝুকছেন।

টাঙ্গাইল পার্ক বাজারে কথা হয় জেলা সদর থেকে আসা ক্রেতা আব্দুর রহমানের সাথে তিনি জানান, গরু কোরবানীর জন্য দা, ছুরি ও চাপাতির অর্ডার দিয়েছি। ঈদ আসলে দাম একটু বাড়ে। তবুও আমাদের বানাতে হয়। কোরবানীর পশু কেনার যে সময় লাগে এখন তার চেয়ে বেশী সময় লাগে সরঞ্জামাদি বানাতে ।

তিনি আরও বলেন, তবে গতবারের তুলনায় এবার দাম একটু কম বলেই মনে হচ্ছে। এছাড়া এবার কামারের দোকান গুলোতে ভীড়ও কম পরিলক্ষিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার জেলায় ২ লাখ ১১ হাজার ৯৭৪টি কোরবানির পশুর চাহিদার বিপরিতে প্রস্তুত করা হয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৭০টি পশু। তবে জেলায় কত পরিবার কামার পেশার সাথে যুক্ত আছেন সে তথ্য জানাতে পারেননি সরকারের সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান দপ্তর।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ