নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার ধনু নদে বিয়েবাড়ির স্পিডবোট ডুবে নিখোঁজ চারজনের মধ্যে তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে ও গতকাল শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৭০০ মিটার দূরে লাশগুলো ভেসে ওঠে। ওই ঘটনায় এখনো একজন নিখোঁজ আছেন।
এর আগে গত শুক্রবার বেলা একটার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পাঁচহাট চরপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
উদ্ধার করা লাশ তিনটি হলো খালিয়াজুরির আন্ধাইর গ্রামের মোফায়েল মিয়ার মেয়ে ঊষামণি (৫), স্বপন মিয়ার মেয়ে মোছা. লাইলা আক্তার (৭) ও সামছু মিয়ার মেয়ে সামিয়ার (১১)। আর নিখোঁজ আছেন নবাব মিয়ার মেয়ে শিরিন আক্তার (১৮)।
নেত্রকোনায় স্পিডবোট ডুবে শিশুসহ নিখোঁজ ৪ জনের সন্ধান মেলেনি
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার আন্ধাইর গ্রামের নবাব মিয়ার ছেলে রানা মিয়ার বিয়ে উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা থেকে একটি স্পিডবোট ভাড়া করে আনা হয়েছিল। স্পিডবোটে চড়ে বরসহ বরযাত্রীদের ইটনা উপজেলার মৃগা গ্রামে কনের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। বরযাত্রীরা রওনা হওয়ার আগমুহূর্তে বেলা একটার দিকে বিয়েবাড়ির ১২ উৎসুক শিশু ও নারী স্পিডবোটটি নিয়ে হাওরে ঘুরতে যান। এ সময় ধনু নদে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাল্কহেডকে পাশ কাটিয়ে কাছে থাকা জেলেদের নৌকার সঙ্গে স্পিডবোটটির সংঘর্ষ হয়। এতে জেলেদের জাল ছিঁড়ে যায়। তখন জেলেরা তাঁদের জাল ছিঁড়ে ফেলাসহ নৌকায় কেন ধাক্কা দেওয়া হয়েছে, এ নিয়ে স্পিডবোটে উঠে চালকের সঙ্গে ঝগড়া বাধান। হাতাহাতির এক পর্যায়ে স্পিডবোটটি উল্টে যায়। তবে স্পিডবোটে থাকা লোকজনের দাবি, জেলেরা ইচ্ছা করে স্পিডবোটটি ডুবিয়ে দেন। এতে ওই চারজন নিখোঁজ ও তিনজন আহত হন। অন্যরা সাঁতার কেটে রক্ষা পান। গতকাল ও আজ সকালে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। অন্যজনের এখনো সন্ধান মেলেনি।
খালিয়াজুরির ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকা মোহনগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এ কাদের বলেন, ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল থেকে ময়মনসিংহের ডুবুরি দল এসে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। নিখোঁজ তিনজনের লাশ ভেসে উঠেছে। লাশগুলো উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, নদে পানির গভীরতা ও স্রোত বেশি থাকায় উদ্ধারকাজ বেশ জটিল হচ্ছে। নিখোঁজ আরেকজনকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।