চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম ইকবাল এবং সদর ঘাট নৌ থানার ইনচার্জ সোহাগ রানা দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিনা এলাকায় মেঘনা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য জানান, ঘন কুয়াশার কারণে এম.ভি জাকির সম্রাট-৩ ও এম.ভি অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামের দুটি লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। প্রাথমিকভাবে দুইজন নিহতের খবর পাওয়া গেলেও পরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনার পরপরই নিহতদের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ভোলার ঘোষেরহাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা এম.ভি জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চটি রাত ২টার পর হাইমচর নৌ এলাকা অতিক্রম করছিল। একই সময়ে ঢাকা থেকে বিএনপির সম্মেলনের যাত্রী নিয়ে বরিশালগামী এম.ভি অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চটি যাত্রা করছিল। নদীজুড়ে প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে দিক নির্ণয়ে ব্যর্থ হয়ে অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চটি সজোরে জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চকে ধাক্কা দেয়।
যাত্রীরা অভিযোগ করেন, কুয়াশার মধ্যেও অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। সংঘর্ষের পর বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলেও লঞ্চটি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
অন্যদিকে দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চটি মাঝনদীতে ডুবো-ডুবো অবস্থায় ভাসতে থাকলে ভোলা থেকে ঢাকাগামী এম.ভি কর্ণফুলী-৯ লঞ্চটি দ্রুত এগিয়ে এসে অনেক যাত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়।
নিহতদের মরদেহ ও গুরুতর আহত অর্ধশতাধিক যাত্রীকে বহন করে ক্ষতিগ্রস্ত জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চটি চিকিৎসার জন্য ঢাকার দিকে রওনা দেয়। আহতদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
