রবিবার, জুন ৮, ২০২৫
No menu items!
বাড়িজাতীয়এপ্রিল নয় আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায় বিএনপি

এপ্রিল নয় আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায় বিএনপি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে—প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ ঘোষণা গোটা জাতিকে হতাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে,এপ্রিলে নয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রতি তারা আবারও আহ্বান জানাচ্ছে।

শনিবার (৭ জুন) সকালে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিএনপি জানায়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্রসমাজ ও জনতার বিপুল ত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন আয়োজনের অযৌক্তিক বিলম্ব জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।
রমজান মাস, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষা, এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনই যথাযথ হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের পর দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে বিবৃতিটি দেওয়া হয়।
বৈঠকে ইউনূসের ভাষণের বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলেন, ‘এই ঘোষণা দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করেছে। প্রায় দেড় দশক ধরে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত এ দেশের জনগণ। গুম, হত্যা, কারাবরণ, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েও তারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঐকমত্যের কথা বললেও, তারা একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এতে করে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া নিয়ে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ স্বাভাবিক বলেও উল্লেখ করেন তারা।
নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে বিএনপি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচন দিলে তা আবহাওয়াজনিত জটিলতা এবং রমজান মাসের কারণে প্রচারণা ও নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। পরবর্তীতে এগুলোকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে আবারও সময় পেছানোর পথ তৈরি হতে পারে বলেও সতর্ক করে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটি বলছে, ‘প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না করার পক্ষে কোনো সুস্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য যুক্তি উপস্থাপন করা হয়নি। বরং ঈদুল আজহার বার্তা দেওয়ার কথা বললেও তার বক্তব্য এক পর্যায়ে জাতির উদ্দেশ্য ভাষণে রূপ নেয়। সেখানে অনেক রাজনৈতিক ভাষা ও শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, যা সৌজন্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে।’
এছাড়া বন্দর ও করিডর ইস্যু অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না বলে অধ্যাপক ইউনূস নিজেই স্বীকার করলেও, ওই বিষয়ে তার দিকনির্দেশনাও প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি।
বিবৃতির শেষে বিএনপি আবারও জোর দিয়ে জানায়, জনগণের প্রত্যাশা ও বাস্তবতা বিবেচনায় চলতি বছরের মধ্যেই একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। দলটি মনে করে, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ালে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হবে এবং জনগণের আস্থা আরও হ্রাস পাবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ