গাজীপুরের শ্রীপুরে জমি সংক্রান্ত জেরে দুই প্রতিবেশী পরিবারের সাথে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের মারামারিতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় এক পক্ষ দা দিয়ে কুপিয়ে অপর পক্ষের এক ব্যক্তির হাত (কব্জি) কেটে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় তার অবস্থার অবনতি ধরা পড়লে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়রে সোনাকর তাঁতীসুতা দক্ষিন পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে হামলাকারিরা পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন।
হামলায় (দায়ের কোপে) কব্জি হারানো ব্যক্তির নাম শেখ হযরত আলী (৬০) । তিনি ওই গ্রামের মৃত শেখ হাবিজ উদ্দীনের ছেলে।
এ দিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস। তিনিও ওই গ্রামের রামপ্রসাদ দুলালের ছেলে। অমৃত চন্দ্র পেশায় পুরিশ সদস্য। তিনি পাশে টাঙ্গাইলের নাগরপর থানায় কর্মরত আছেন। ছুটিতে বাড়ি এসে প্রতিবেশীর সাথে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান।
স্থানীয়রা ও আহতের স্বজনরা জানান- দীর্ঘদিন ধরেই বেশ কিছু সরকারীর জমি বন্দোবস্ত নিয়ে শেখ হযরত আলী ও তার পরিবার চাষাবাদ করছিল। তবে এ জমি নিয়ে অমৃত চন্দ্রের পরিবারও দাবি করে আসছে। এ নিয়ে দুই পরিবারের বিরোধ চলে আসছে। আস সকালে অমৃত চন্দ্র তার লোকজন নিয়ে জমিতে হালচাষ করতে গেলে তর্ক বাধে। একসময় তা জড়ায় ঝগড়ায়। পরে দুই পরিবারের লোকজন দা লাঠি নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায় সংঘর্ষ বাধলে হযরত আলীর হাতে কোপ বসিয়ে দেয় অমৃত চন্দ্র। এতে হযরত আলীর বাম হাতের কব্জি থেকে আলাদা হয়ে মাটিতে পড়ে যায়।
এ দিকে অভিযুক্ত অমৃত চন্দ্রের ভাই প্রফুল্ল চন্দ্র অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন মারামারি এক সময় আমাদের ফাঁসাতেই তারা নিজেরা হাত কেটে আমাদের অভিযুক্ত করছে। এটি মিথ্যা অভিযোগ। বরং আমাদের পরিবারের অনেকে তাদের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা একাধিক ব্যক্তি জানান এ জায়গাটা বন বিভাগে। বন বিভাগ কয়েকবার গাছ লাগিয়েও কোনো সুবিধা করতে পারেনি। তারা দুই পরিবারই জবরদখল করে যার যার নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া। এ ঘটনায় বন বিভাগ মামলা করেছে দখলদারদের বিরুদ্ধে। সে মামলা এখনো চলমান। সে জমিতে হালচাষ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি বাধে। এতে একজনের হাতের কব্জি কেটে ফেলা হয়েছে।
শ্রীপুর ফরেস্ট অফিসের কর্মকর্তা (বিট অফিসার) মো. আলাল খান বলেন যে জমি নিযে দুইপক্ষ বিরোধে জড়িয়েছে সে জমি প্রকৃত পক্ষে বন বিভাগের। বেশ কয়েক বার গাছের চারা লাগানো হলেও তা নষ্ট করে ফেলে দখলকারিার। বর্ষাকালে গাছের চারা লাগানো হবে।
শ্রীপুর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) শ্রী নয়ন কর বলেন দুই পক্ষের মারামারিতে একজরে হাত কাটা গেছে। দায়ের কোপে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।