ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কীর সন্দেশ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিশ্ব মেধা সম্পদ দিবস উদযাপন উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে এ সনদ দেওয়া হয়। এতে খুশি সন্দেশের কারিগর ও স্থানীয়রা।এ সময় কালীদাসের সন্দেশের জিআই সনদ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান কালিদাসের সন্দেশের জিআই নিবন্ধনের সনদপত্র টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হকের হাতে তুলে দেন। একই অনুষ্ঠানে জেলার মধুপুরের আনারসের জিআই সনদও হস্তান্তর করা হয়।
কালিদাসের সন্দেশের শুরুর গল্পটিও বেশ চমকপ্রদ। ১০ম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে করায় বাবা প্রয়াত মিষ্টি ব্যবসায়ী মদনমোহন চন্দ্র সাহা সংসার থেকে আলাদা করে দেন কালিদাস চন্দ্র সাহাকে। এরপর বাবার দোকানের পাশেই বসে থেকে ১৯৪০ সালে তিনি নিজেই মিষ্টি বানানো শুরু করেন। তখন থেকে ‘কালিদাস মিষ্টান্ন ভান্ডার’ নামের ছোট্ট দোকানটি পথ চলা শুরু করে, যা আজও একইভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন তার উত্তরসূরিরা।
দোকানে সাজসজ্জা তেমন না থাকলেও মান নিয়ে কোনো আপস হয়নি কখনও। স্থানীয়রা জানান, ১৯৮২ সালে কালিদাস মারা যাওয়ার পর তার বড় ছেলে সমর চন্দ্র সাহা ব্যবসার হাল ধরেন। এখনো সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে টানা। সন্দেশ ছাড়াও দোকানে পাওয়া যায় দই ও অন্যান্য মিষ্টান্ন। গুড় ও চিনির তৈরি দুই ধরনের সন্দেশ বিক্রি হয়, যার কেজি প্রতি দাম ৮০০ টাকা।
জিআই স্বীকৃতির খবরে পুরো জামুর্কী ও মির্জাপুরজুড়ে আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে। দোকানে ক্রেতার ভিড়ও বেড়েছে কয়েকগুণ।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.বি.এম আরিফুল ইসলাম বলেন, এটি মির্জাপুরবাসীর জন্য বিশাল এক গর্বের বিষয়। কালীদাসের সন্দেশ শুধু মির্জাপুর নয়, দেশের বাইরে রপ্তানির সম্ভাবনাও তৈরি হলো।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ১ এপ্রিল কালিদাসের সন্দেশের জন্য জিআই স্বীকৃতির আবেদন করা হয়েছিল।