শনিবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫
No menu items!
বাড়িজাতীয়চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে মানুষের ঢল, উৎসবমুখর নগরী

চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে মানুষের ঢল, উৎসবমুখর নগরী

ইতিহাস, ভাবগাম্ভীর্য আর ঐতিহ্যের সমাহারে নবীপ্রেমিক আশেকদের মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে চট্টগ্রাম নগরী। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা থেকে শুরু হয় ৫৪তম জশনে জুলুস।

আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট আয়োজিত এ মহাসমাবেশে নেতৃত্ব দেন দরবারে সিরিকোটের সাজ্জাদানশীন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (ম.জি.আ.)। তার সঙ্গে ছিলেন সাহেবজাদা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (ম.জি.আ.), সৈয়দ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ (ম.জি.আ.) এবং ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

ষোলশহর, বিবিরহাট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট ও জিইসি মোড় অতিক্রম করে শোভাযাত্রাটি পুনরায় জামেয়া মাদরাসা মাঠে ফিরে আসে। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, জোহরের নামাজ এবং দেশ-জাতির সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ দোয়া।
চট্টগ্রামে জশনে জুলুসের সূচনা হয় ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল। পাকিস্তানের কাদেরিয়া সিরিকোট শরিফের সাজ্জাদানশীন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.) প্রথম এ আয়োজন শুরু করেন। এরপর থেকে প্রতিবছর লাখো আশেক-অনুসারী এতে অংশগ্রহণ করেন। সময়ের পরিক্রমায় এটি শুধু নবীপ্রেমের প্রকাশই নয়, বরং বিশ্বশান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার এক অনন্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিদেশ থেকেও আশেকরা সমাবেশে যোগ দিতে আসেন। হামদ, নাত, দরুদ ও স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো নগরী। অংশগ্রহণকারীরা জানান, জশনে জুলুসে উপস্থিত হওয়া নবীপ্রেমকে হৃদয়ে আরও দৃঢ় করে। স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবারসহ শরবত, ফল, রুটি, খেজুর ও মিষ্টি বিতরণ করেন। তরুণরা এই সেবাকে ইবাদতের অংশ হিসেবে মনে করেন।শৃঙ্খলা রক্ষায় ছিল কঠোর নির্দেশনা—কেবল জাতীয় পতাকা ও আনজুমানের পতাকা বহনের অনুমতি ছিল; ড্রামসেট ও খাবার নিক্ষেপ নিষিদ্ধ রাখা হয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক।
মিছিল ঘিরে পুরো নগরে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। অস্থায়ী দোকানে বিক্রি হয়েছে আতর, তসবিহ, টুপি, ইসলামী বই, পতাকা ও বিরিয়ানি। সড়কজুড়ে শোভা পেয়েছে তোরণ, ব্যানার-ফেস্টুন ও আলোকসজ্জা।

প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে মাইলের পর মাইল হেঁটে আসা আশেকদের আপ্যায়নে ব্যস্ত ছিলেন ভক্তরা। অনেকের কণ্ঠেই শোনা যায় এক সুর—‘এই জুলুস আমাদের ঈমান ও ভালোবাসাকে নবায়ন করে, নবীজীর শাফায়াতের আশা জাগায়।’

Notify of
guest
0 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ