ইমরুল হাসান বাবু,স্টাফ রিপোর্টার: ক্লাসের ভাঙা ছাদ থেকে প্রায়ই পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদের পলেস্তারা পড়ে গিয়ে রড বেরিয়ে গেছে। বৃষ্টি এলেই ছাদ চুইয়ে পড়ে পানি। এ ছাড়া কক্ষের দেয়াল, ছাদ, পিলার ও বিমে ধরেছে ফাটল। বিম থেকে পলেস্তারা খসে পড়ায় জং ধরা রড বেরিয়ে গেছে। মাঝেমধ্যেই দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারাও।
এই ঝুঁকির মধ্যেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে ঘাটাইলের নুচিয়া মামুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকেরা।
বিদ্যালয়টির এমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় অভিভাবকেরা তাদের কোমলমতি শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন। এদিকে বিদ্যালয়টির একমাত্র ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
সরেজমিনে সোমবার (২৬ মে) বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির জরাজীর্ণ চার কক্ষের ভবনের একটিতে বিদ্যালয়ের কার্যালয় আর তিনটিতে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ভাঙা ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বেরিয়ে আছে। বৃষ্টির পানি পড়ে দেয়াল স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে গেছে। কক্ষের দেয়াল, ছাদ, পিলার ও বিমে ফাটল ধরেছে। এ অবস্থায় জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় শতাধিক কোমলমতি শিশু পাঠগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়
নুচিয়া মামুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দেউলিয়াবাড়ি ইউনিয়নের নুচিয়া গ্রামে অবস্থিত।১৯৯৭ সালে ছয় কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে এ ভবনের চারটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও একটি কক্ষ বিদ্যালয়ের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের অনেক জায়গায় দেয়াল, পিলার ও বিমে ফাটল। খসে পড়ছে ছাদের পলেস্তারা। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে ছয়জন শিক্ষক পড়াচ্ছেন। এ বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, ক্লাস করার সময় সবসময় ভয় কাজ করে কখন যেন কিছু একটা ভেঙে পড়ে। কয়েকবার পলেস্তার খসে পড়ায় কেউ কেউ সামান্য আহতও হয়েছে। তারা দ্রæত নতুন ভবন নির্মাণ দাবি জানিয়েছে।
বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক বলেন, এই বিদ্যালয়ে আমার সন্তান পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়ের ভবন এমন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও বিদ্যালয়ের নতুন ভবন করা হচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরিন খাতুন বলেন,বিদ্যালয়ের ভবনের ছাদে বিভিন্ন জায়গায় পলেস্তার খসে খসে পড়ছে। ভবনটি এমন ঝুঁকিপুর্ন ঝড় বৃষ্টির সাজ করলেই অভিবাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয় থেকে নিয়ে যায়। যেকোন সময় ভেঙে পড়তে পাড়ে বিদ্যালয়ে ভবন। তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা শিক্ষা অফিসার রাফিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি এ উপজেলার ঝুঁকিপুর্ণের মধ্যে এক নম্বর তালিকায় রয়েছে। কেন এখানে নতুন ভবন হচ্ছেনা তিনি জানেন না। তবে তিনি পুনরায় তালিকা দিবে বলে আশ্বাস দেন।