গাজীপুরে খামারে রাজত্ব করছে ‘ভাওয়াল রাজা’। ভাওয়াল রাজা’ ওজন ১২শ কেজি। দাম হাঁকা হচ্ছে সাড়ে ৮ লাখ। এবার কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত গাজীপুরে সবচেয়ে বড় গরু ৩০ মণ বা ১২শ কেজি ওজনের ‘ভাওয়াল রাজা’। আদর করে খামারি তাঁর নাম রাখেন ভাওয়াল রাজা। বিশাল আকৃতির গরুটি ‘ভাওয়াল রাজা’ বলে ডাক দিলেই সাড়া দেয় সাথে সাথে। গরুটি দেখতে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ভিড় জমিয়েছেন খামারে।
এটি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ গ্রামের মাস্টার অ্যাগ্রো ফার্মে লালিত পালিত হচ্ছে। প্রকৃতির মাঝে গড়ে উঠা মাস্টার অ্যাগ্রো ফার্মে গিয়ে দেখা মেলে ৩০ মণ বা ১২০০ কেজি ওজনের ‘হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান’ জাতের ষাঁড় গরুটির। যাকে বের করতে ও সামলাতে ২০ থেকে ২৫ জন লোকের দরকার পড়ে। কারণ শান্ত স্বভাবের হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি ছাড়া পেলেই রীতিমতো তাণ্ডব চালায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার বছর বয়স্ক ছয় দাঁতের বিশালাকৃতির ‘হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান’ ষাঁড় গরুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩ ফুট ও উচ্চতায় সাড়ে ৬ ফুট। মাস্টার অ্যাগ্রো ফার্ম কর্তৃপক্ষের দাবি – খামারটির খোলামেলা পরিবেশ ও প্রাকৃতিক খাবারে বেড়ে উঠেছে এ ষাঁড়টি, পুরো উপজেলায় এর চেয়ে বড় গরু আর একটিও নেই। এবার কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য এটিকে প্রস্তুত করেছেন মাস্টার অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মাহফুজুর রহমান।
মাস্টার অ্যাগ্রো ফার্ম সূত্র জানায়, ‘হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান’ ষাঁড় গরুটির সঙ্গে একই খামারে ২৫টি গরু-ছাগল লালন-পালন করা হচ্ছে। চলতি বছর কোরবানি ঈদের জন্য ৯টি দেশি ষাঁড় প্রস্তুত করা হয়েছে খামারে।
ফার্মের মালিক মাহফুজ জানান, নিয়মিত পরিচর্যায় দুই থেকে তিন বেলা শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করানো হয় ষাঁড়টিকে। নিয়ম করে তিন বেলার খাবারে দেওয়া হয় খামারির নিজস্ব জমির কাঁচা ঘাস, ভুট্টা, খৈল, লবণ ও গম ভাঙা।
খামারের পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা জুয়েল বলেন, প্রতিদিন প্রায় ১৬শ টাকার খাবার খায় ষাঁড় গরুটি। একে নিয়ম করে প্রতিদিন অন্তত দু’বার গোসল করানো হয়। আমরা পরিবারের সদস্য মনে করেই তাকে লালন-পালন করছি। এটি খুব শান্ত হলেও মাঝেমধ্যে অশান্ত হয়ে যায়। ষাঁড়টি বের করতে গেলে ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাগে। খামারে অনেক গরুর মধ্যে ‘হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান’ জাতের গরুটি সবচেয়ে বড়।
মাস্টার অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মাহফুজুর রহমান বলেন, ষাঁড়টিকে আমরা হাটে তুলব না,খামার থেকেই বিক্রি করব। সাড়ে ৮ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চাইছি। ইতিমধ্যে ৮ লাখ টাকা দাম উঠেছে। সাড়ে তিন বছর আগে পাশের বাউনি গ্রামের কৃষকের নিকট থেকে ষাঁড়টি ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনি। তখন এর বয়স ছিল এক বছরের মতো। আমরা একে প্রাকৃতিকভাবে লালনপালন করেছি,পরিমিত খাবার দিয়েছি। বেশি খাবার দিলে এর ওজন আরও ৬ -৭ মণ বেশি হতো। ওজন অতিরিক্ত হলে ঝিমায় যেত, কিন্তু ষাঁড়টি এখন খুবই প্রাণবন্ত।
শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশরাফ হোসেন বলেন, শুরু থেকে উপজেলার লোহাগাছ গ্রামের
মাস্টার অ্যাগ্রো খামারটির বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা হয়েছে। খামারটিতে ১২শ কেজি ওজনের বড় একটি ষাঁড় গরু আছে। এবার এটিই সবচেয়ে বড় গরু।খামারিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হয়। মাঝারি ও ছোট গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় উপজেলায় বড় গরু পালনে মানুষ কম আগ্রহী। উপজেলায় এটি হচ্ছে সবচেয়ে দামি গরু। আশা করছি যে এবার কোরবানি ঈদে খামারিরা তাদের পশুর ভালো দাম পাবেন।