সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষবারের মতো একনজর দেখা ও নামাজে জানাজায় অংশ নিতে ঢাকার পথে ছুটে আসছেন সর্বস্তরের লাখো মানুষ। বাস, ট্রেন ও লঞ্চে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকেই রাজধানীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় সেই জনস্রোত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দেশের নানা জেলা থেকে আগত বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ প্রিয় নেত্রীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে জড়ো হচ্ছেন। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই মানুষের ঢল বাড়তে থাকে।
ভোলা, বরিশাল ও চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের নেতাকর্মীরা নদীপথে সদরঘাটে এসে রাজধানীতে প্রবেশ করেন। একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ ও অন্যান্য জেলা থেকে আগত ট্রেন ও বাসগুলোতেও ছিল উল্লেখযোগ্য ভিড়।
তীব্র শীত উপেক্ষা করে মঙ্গলবার গভীর রাত থেকেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় মানুষের ভিড় জমতে শুরু করে। অনেকে ফুটপাতেই রাত কাটিয়েছেন, যেন সকালে জানাজায় সামনের সারিতে থাকতে পারেন। বগুড়া থেকে আসা ৬২ বছর বয়সী কৃষক সাত্তার মিয়া বলেন, “ম্যাডাম হামাগের মা। ওনারে শেষবারের মতো দেখমু না—তা কি হয়? শরীর ভালো না, তাও মনের জোরে আসছি। জানাজায় শরিক হতে পারলেই শান্তি।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, সমবেত মানুষের চোখেমুখে শোকের ছায়া। দলীয় কার্যালয় ও সড়কজুড়ে উড়ছে কালো পতাকা। ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকেও ভোর থেকেই মিছিল নিয়ে মানুষ আসছেন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে।
আজ বুধবার দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। জানাজা শেষে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেরেবাংলা নগরে স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জীবনের শেষ মুহূর্তে তার পাশে ছিলেন বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পরিবারের সদস্যরা।
