শনিবার, আগস্ট ২, ২০২৫
No menu items!
বাড়িবিনোদনআড়ালকে সামনে আনলেন বাঁধন:ফেসবুকে স্ট্যাটাস

আড়ালকে সামনে আনলেন বাঁধন:ফেসবুকে স্ট্যাটাস

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন সম্প্রতি তার ফেসবুক হ্যান্ডেলে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যেখানে তিনি নিজের প্রতি ঘটে যাওয়া ব্যক্তিগত আক্রমণ, অপমান ও ঘৃণার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ক্ষোভ ঝেড়েছেন সহকর্মীদের বিরুদ্ধে। তার এই স্ট্যাটাস ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বাঁধন লেখেন, ‘এর মধ্যেই একটা ভয়ংকর ঘটনা ঘটে গেল। আমার নিজের কিছু সহকর্মীই আমার ওপর আক্রমণ শুরু করলো- ব্যক্তিগতভাবে, নির্মমভাবে এবং নির্দয়ভাবে।’
তিনি জানান, যারা তাকে আক্রমণ করেছে তারা শুধুই ইন্টারনেটের অচেনা মানুষ নন, বরং এমন অনেকেই আছেন যাদের সঙ্গে তিনি একসঙ্গে কাজ করেছেন, মঞ্চ ও পর্দাও ভাগ করেছেন, যাদের ওপর একসময় বিশ্বাস করেছিলেন।
বাঁধন বলেন, ‘তারা এখন আমাকে বিতর্কিত করার জন্য নানা ছবি ছড়িয়ে দিচ্ছে, যেমন- রুমিন ফারহানা ও ভিপি নূরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছবি; বিষয়টা এমন যেন তাদের পাশে দাঁড়ানো মানেই আমি অপরাধী! এমনকি আমার পুরনো ছবি, যেখানে আমি শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে রয়েছি, সেটাও বিকৃতভাবে ছড়ানো হচ্ছে। তারা এমন আচরণ করছেন যাতে মনে হচ্ছে তারা কথাবার্তা ভুলে গেছে, যুক্তি হারিয়ে ফেলেছে।’
তিনি আরো লিখেন, ‘তারা আমার প্রতি ঘৃণা ছড়িয়েছে, আমার কাজ, অবস্থান- সবকিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে।
তিনি জানান, তিনি সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছেন তার প্রাক্তন সহকর্মীদের কাছ থেকে, যাদের সঙ্গে একসময় একসঙ্গে কাজ করেছেন, হাসিমুখে সময়ও কাটিয়েছেন।
বাঁধন আক্ষেপ করে বলেন, ‘তারা যেন হঠাৎ করে হিংস্র হয়ে উঠেছে- শুধু এই কারণে যে আমি তাদের মতো চিন্তা করিনি। তাদের ঘৃণা যেন এতটাই উন্মত্ত যে না ছড়ালে নিজেরাই দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে।’
সমাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাঁধন, ‘কী ভয়ঙ্কর এক সমাজে বাস করছি আমরা, যেখানে ভিন্নমত সহ্য করার শক্তিটুকু নেই? যেখানে রাজনীতি শুরু হলেই মানবতা শেষ হয়ে যায়?’
স্ট্যাটাসের শেষাংশে বাঁধন লেখেন, ‘ঘৃণা ছড়ানো, সহিংসতা- সবই তাদের পছন্দ। আমি বলব না থামতে। তাদের জীবন, তাদের পছন্দ।’
এই স্ট্যাটাস প্রকাশের পরপরই অনেকে আজমেরি হক বাঁধনের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আবার কেউ কেউ এই স্ট্যাটাস নিয়েও বিতর্ক তৈরি করেছেন।
তার প্রতি এই আক্রমণের কারণ হিসেবে বাঁধন অন্য একটি স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, গত বছর জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে দাঁড়ানোতেই তার শত্রুর সংখ্যা বেড়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তার সহকর্মীরাও তার বিরুদ্ধাচরণ করেছেন।
অপর একটি পোস্টে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছেন বাঁধন। ওই পোস্টে বাঁধন বলেন, ‘আমার সাবেক স্বামী- তার কিছু কর্মস্থলের সহকর্মী এবং শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ফটোসাংবাদিকের সহায়তায়- আমার বিরুদ্ধে একটি ঘৃণ্য প্রচার অভিযান চালান। তারা সংবাদমাধ্যম ভরে তোলে মিথ্যা খবর আর বিকৃত ছবি দিয়ে, যেন আদালতে প্রমাণ করা যায় আমি একজন ‘খারাপ মা’, ‘লজ্জাহীন নারী’। আমার ছবি ছাপা হতে থাকে, শিরোনামে একের পর এক মিথ্যে কাহিনি। যাদেরকে আমি আপন ভাবতাম, তাদের অনেকেই তখন চুপ করে থাকেন। কেবল বিনোদন জগতের কয়েকজন সাংবাদিক এবং অনেক অজানা শুভাকাঙ্ক্ষী পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ব্যথা দিয়েছে এই চরিত্রহননের চেষ্টা নয়, বরং বিশ্বাসভঙ্গ। তিনি শুধু আমার প্রাক্তন ছিলেন না- আমার সন্তানের বাবা ছিলেন। তবুও তিনি আমাকে শেষ করে দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছিলেন। আমি তাকে ভালোবাসিনি, কিন্তু বিশ্বাস করেছিলাম। আর সেই বিশ্বাস তিনি এমনভাবে ভেঙে দিয়েছিলেন, যেভাবে কেউ তার সবচেয়ে কাছের মানুষকেও নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করে।’
এদিকে বাঁধন তার সহকর্মীদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেও প্রকাশ্যে কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে বাঁধনের একটি পোস্টের কমেন্টের স্ক্রিনশট প্রকাশ করে অভিনেত্রী সোহানা সাবা একটি পোস্ট করে বাঁধনের বিরোধিতা করেন। সেই সূত্রে অনেক গণমাধ্যম বাঁধনের ক্ষোভের নেপথ্যে সোহানা সাবাকেই দায়ী করে সংবাদ প্রকাশ করেছিল।
তবে বাঁধন তার পোস্টে বলেছেন তিনি কারও প্রতি প্রতিশোধ পরায়ন হতে চান না, বরং প্রতিটি সমালোচনার বিরুদ্ধে নিজের কাজ ও নিরবতা দিয়ে উচিত জবাব দিতে চান।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ