শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫
No menu items!
বাড়িঅর্থনীতিউচ্চঝুঁকিতে ৩২ বিমা কোম্পানি

উচ্চঝুঁকিতে ৩২ বিমা কোম্পানি

বর্তমানে উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ৩২টি বিমা কোম্পানি। এর মধ্যে ১৫টি জীবনবিমা (লাইফ ইন্স্যুরেন্স) ও ১৭টি সাধারণবিমা কোম্পানি। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এম আসলাম আলম সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিলে সংস্থাটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম এসব কথা বলেন।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, সময়মতো বিমা দাবি পরিশোধ না করায় এ খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা তলানিতে নেমেছে। এ খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ছাড়া আস্থা বাড়ানো সম্ভব না।
বিমা খাতের ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জীবন বিমা খাতের ৩৬টি কোম্পানির মধ্যে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫টি। আর ১৫টি রয়েছে মধ্যম ঝুঁকিতে। ভালো অবস্থানে রয়েছে ৬টি লাইফ বিমা কোম্পানি।এর মধ্যে যে কয়টি কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলোর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে যেসব কোম্পানি মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের সমস্যাগুলো নিরসনযোগ্য। সঠিক ব্যবস্থা নিলে এগুলো ঠিক করা যাবে বলে জানান আইডিআরএ চেয়ারম্যান ।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, নন-লাইফ বা সাধারণ বিমা খাতেও ১৭টি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। বিমা দাবি পরিশোধ না করাসহ বিমা কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন মানদণ্ড যাচাই করে এটি চিহ্নিত করা হয়েছে। ড. এম আসলাম আলম বলেন, বর্তমানে লাইফ বিমার ৪৫ শতাংশ এবং নন-লাইফ বিমার ক্ষেত্রে প্রায় ৪৭ শতাংশ বিমা দাবি অপরিশোধিত রয়েছে। এসব বিমা দাবি সময়মতো পরিশোধ করা এবং বিমা গ্রহীতার আস্থা বাড়াতে বিভিন্ন আইন ও বিধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংক রেজল্যুশনের আদলে বিমাকারীর রেজল্যুশন অধ্যাদেশ প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। এর আলোকে কেবল বিমা প্রতিষ্ঠান একীভূত হবে তেমন না; অবসায়ন, অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা ১৫ জীবন বিমা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, সানলাইফ, গোল্ডেন লাইফ, বায়রা লাইফ, প্রগ্রেসিভ লাইফ, এনআরবি ইসলামিক লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, বেস্ট লাইফ, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ, যমুনা লাইফ এবং স্বদেশ লাইফ।
আসলাম আলম বলেন, জিডিপি অনুপাতে ২০১০ সালে বিমার হার ছিল শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশে নেমেছে। ২০২৪ সালে তা আরও কমেছে। তিনি জানান, আস্থা বাড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক, আইনগত ও ডিজিটালি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আইডিআরএ শুধু ২০২৪ সালে ২৪ হাজার ৮৫২টি অভিযোগ পেয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারণে এসব তদারকি করা সম্ভব হচ্ছে না। আইডিআরএতে ১৬০ জন অনুমোদিত জনবলের বিপরীতে আছে মাত্র ১০৭ জন কর্মরত। জনবল বাড়ানোর জোর চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
সম্প্রতি বিমা কোম্পানিগুলোর নিবন্ধন নবায়ন ফি হাজারে ১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে আইডিআরএ। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। লোকবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লোকবল বাড়লে তখন আইডিআরএর খরচ বাড়বে। আর আইডিআরএ গঠন করার সময় এর নীতিমালাও এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, নিজের আয়ে এ সংস্থাটি চলবে। ফলে নিজেদের খরচ বিবেচনা করেই নিবন্ধন নবায়ন ফি বাড়ানো হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ