বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১৬, ২০২৫
No menu items!
বাড়িকৃষি ও প্রকৃতিদ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধ নদীগর্ভে, ঝুঁকিতে হাজারো মানুষ

দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধ নদীগর্ভে, ঝুঁকিতে হাজারো মানুষ

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নে দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১৩০ মিটার অংশ ভয়াবহ ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু এবং রংপুর–লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়ক। প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করেন প্রায় ৩০–৩৫ হাজার মানুষ। হঠাৎ ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ১১ আগস্ট বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার অংশ ধসে গিয়ে ৭০ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। এরপর ১৭ আগস্ট থেকে ধস আরও তীব্র হয়ে ভাঙনে রূপ নেয়। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে দেখা যায়, রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ সম্পূর্ণরূপে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৭০০টি পরিবার সরাসরি হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ: বারবার জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।বাঁধসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা রিপন ও কাইয়ুম জানান, প্রতিদিন ভাঙনের পরিমাণ বাড়ছে। এখন ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি রক্ষার জন্য তারা শঙ্কায় রয়েছেন।
ব্যবসায়ী শাহনাজ বেগম বলেন, “প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করি শহরে যাওয়া-আসার জন্য। সেতু যদি ধসে পড়ে, তাহলে পুরো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।”
শিক্ষার্থী বাদশা মিয়া জানান, “প্রাইভেট পড়তে গিয়ে দেখি, বাঁধ নদীতে চলে গেছে। কাল হয়তো রাস্তা থাকবে না।”
স্থানীয় কৃষক খোরশেদ আলীর ভাষ্য, “আমাদের আবাদি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। এলজিইডি শুধু আশ্বাস দেয়, কোনো কাজ করে না।”
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, “আমরা বারবার এলজিইডিকে জানিয়েছি। তারা বলেছে দেখবে, কিন্তু বাস্তবে কিছু করেনি। এখন পুরো সেতুই হুমকির মুখে।”
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, “বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা জানান, “পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।”
স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু ধসে যেতে পারে, ফলে যোগাযোগব্যবস্থা এবং জীবিকা উভয়ই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্থানীয়দের পক্ষ থেকে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলানো, ব্লক বসানো ও জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে।

Notify of
guest
0 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ