তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে হারভেস্টার ও শ্রমিক সংকটে পড়েছেন ময়মনসিংহের কৃষকরা।গত কয়েক দিন ধরে কৃষি শ্রমিকের সংকট চরমে পৌঁছেছে। গরমের কারণে কৃষি শ্রমিকের অভাবে তারা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না। এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও শ্রমিক সংকটে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ জমির ধান পেকে গেলেও পাওয়া যাচ্ছে না হারভেস্টার মেশিন। পাশাপাশি শ্রমিক সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে। অনেক কষ্টে শ্রমিক পাওয়া গেলেও হাজার টাকার নিচে কেউ কাজ করতে রাজি নয়। সরকারি নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী প্রতি ১০ শতক জমির ধান কাটতে খরচ হওয়ার কথা ৫৪০ টাকা। কিন্তু হারভেস্টার মালিকরা নিচ্ছেন প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা। কেউ কেউ এই অতিরিক্ত টাকা দিতেও বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু তারপরও মিলছে না মেশিন, দেওয়া হচ্ছে লম্বা সিরিয়াল। এদিকে কৃষকদের আরেকটি বড় সমস্যা তৈরি করেছে ধান ব্যবসায়ীরা। বাজারে ধান বিক্রি করতে গেলে এক মণ ধানের জন্য পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ৮৭০ টাকা, কোথাও কোথাও ৮২০ টাকা। এর সঙ্গে বিনামূল্যে দিতে হচ্ছে তিন কেজি করে অতিরিক্ত ধান। বাড়তি ধান না দিলে ব্যবসায়ীরা ধান কিনতে নারাজ। বাধ্য হয়েই কৃষকরা বাড়তি ধান দিয়েই বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে সদর উপজেলার চর ঈশ্বরদিয়া, সিরতা, বোররচর, পরানগঞ্জ ও চরনিলক্ষীয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কিছু এলাকায় হারভেস্টার মেশিন এবং শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা হলেও বেশির ভাগ এলাকায় ভিন্ন চিত্র। প্রচণ্ড রোদের মধ্যে কৃষকরা পরিবারসহ বিরামহীনভাবে ধান কাটছেন। বাড়ির উঠান ও মাঠে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজেও ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
কৃষকরা জানান, হারভেস্টার মেশিন পেতে গেলে অতিরিক্ত টাকা চাওয়া হচ্ছে। অনেকে টাকা দিতে রাজি হলেও সিরিয়ালের কারণে সময়মতো ধান কাটতে পারছেন না। অন্যদিকে শ্রমিকের সংকট। দুই-একজন শ্রমিক মিললেও হাজার টাকার কমে কেউ কাজ করছে না। হঠাৎ ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা থাকায় কৃষকরা নিজেরাই ধান কেটে বাড়িতে মাড়াই করছেন।