বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৪, ২০২৫
No menu items!
No menu items!
বাড়িকৃষি ও প্রকৃতিঅসময়ে গাছে গাছে ঝুলছে কাঁঠাল,চারা কিনতে ভিড়

অসময়ে গাছে গাছে ঝুলছে কাঁঠাল,চারা কিনতে ভিড়

গাজীপুরের শ্রীপুরে মাহমুদুল হাসান সবুজ  নামের এক যুবক বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন ভিয়েতনামের বারোমাসি কাঁঠাল বাগান।সরকারি প্রণোদনার সুবিধা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে কাঁঠাল বিদেশে রফতানি করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। এদিকে,অসময়ে গাছে কাঁঠাল দেখতে ও তার বাগা‌নের নার্সারিতে প্রতিদিন কাঁঠালের চারা কিনতে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।বাংলাদেশে সাধারণত গ্রীষ্ম ও বর্ষায় কাঁঠাল পাওয়া গেলেও সবুজের বাগানে শীতকালেও কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে।বর্তমানে কাঁচা-পাকা ফলে ভরা তার বাগানের কাঁঠাল গাছগুলো।পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় নতুন জাতের এই কাঁঠালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাজারে।তাই তিনি এই চাষে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।জানা গেছে,গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ উত্তর পাড়া এলাকায় গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে কৃষি উদ্যোক্তা  মাহমুদুল হাসান সবুজ।প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ভিয়েতনামের বারোমাসি জাতের কাঁঠাল বাগান করেন ২০২৩ সালে।ভারতের বিপুল মজুমদার নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি এ জাতের চারা সংগ্রহ করেন।চারাগুলো বাগানে লাগানোর ছয় মাস থেকে অল্প পরিমাণে ফল আসা শুরু করে।আর ৪ বছর বয়স হলেই প্রতিটি গাছে পরিপূর্ণ মাত্রায় ফল ধরে। বর্তমানে বাগানের প্রত্যেকটি গাছে কাঁচা-পাকা প্রচুর কাঁঠাল রয়েছে।বাগা‌নের নার্সারিতে প্রতিদিন বারোমাসি কাঠালের চারা কিনতে দর্শনার্থীদের ভিড় করছেন।কৃষি উদ্যোক্তা সবুজ বলেন, বছরের প্রথম থেকে গাছে ফল আসলেও ফল বাজারে বিক্রির উপযুক্ত হয় মার্চ মাস থেকে। এই জাতের কাঁঠালের গায়ের রঙ কাঁচায় গাঢ় সবুজ। আর পাকলে ভেতরের রঙ গাঢ় হলুদ।কাঁঠাল খেতে মিষ্টি,সুস্বাদু এবং সুগন্ধি যুক্ত হয়।অন্যান্য কাঁঠালের তুলনায় এ জাতের কাঁঠালে আঠা কম হয়। উৎপাদন খরচও তুলনামূলক কম। নিয়মিত পরিচর্যা, আর জৈব সার ব্যবহার করলেই হয়।সবুজ আরো বলেন, এ ধরনের বাগান বাংলাদেশেই খুবই কম।এ জাতের কাঁঠালে তেমন কোনো খরচ নেই।চারাও বেশ চাহিদা রয়েছে।নার্সারিতে প্রতিদিন লোকজন আসছে কেনার জন্য। সরেজমিনে বাগান ঘুরে দেখা গেছে, ১০ থেকে ১২ ফুট দীর্ঘ গাছগুলোর গোড়ার মাটি থেকে থোকায় থোকায় কাঁঠাল ধরে আছে।কাঁঠালের ওজনে গাছ যেন ভেঙে না যায়,সেজন্যে বাঁশের খুঁটি গেড়ে গাছগুলো বেধেঁ দেওয়া হয়েছে।পানি ও সার দেওয়া হয় নিয়মিত।প্রতিটি গাছ প্রায় ৫০-৬০টি কাঁঠাল ধরেছে।গড় ওজন প্রায় ৫-৬ কেজি। প্রতি পিচ কাঁঠাল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা দরে।অসময়ে পাকায় এই কাঁঠালের দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।দর্শনার্থী পাশ্ববর্তী দারুল উলুম সামাদনগর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক রেজাউল করিম কাঁঠাল বাগান দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেন, এই সময় পাকা কাঁঠাল পাওয়া যায় এটা আমি প্রথম দেখলাম। কাঁঠাল খেতেও অনেক স্বাদ এবং গন্ধ অনেক সুন্দর। তবে দেশী কাঁঠালের যে পরিমাণ আঠা থাকে এতে অত আঠা নেই। কৃষি বিভাগ থেকে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণসহ প্রণোদনা দেওয়া হলে একদিকে যেমন বেকার সমস্যা দূর হবে। অন্যদিকে দেশের ফলের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে বলে মনে করেন বেকার যুবকরা।তেলিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল বাতেন সরকার বলেন, আমি মনে করি, কৃষি বিভাগের এসব তরুণ উদ্যেক্তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো দরকার। সরকার অনেককেই ভর্তুকি দিচ্ছে। সে রকম এদেরকে ভর্তুকি বা ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করা দরকার। বেকার যুবকরা আর্থিক লাভবানের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখবে।শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন,কৃষি উদ্যোক্তা সবুজের বাগানে সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হয়।সবুজ একজন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। বাজারে বারোমাসি কাঁঠালের চাহিদা রয়েছে।কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সাহায্য সহযোগীতা করা হবে।

Notify of
guest
400


0 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
আরো দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ